নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাদ আসর জানাজা শেষে ছাতারপাড়া গোরস্তানে তাদের পাশাপাশি দাফন করা হয়। জানাজায় হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।
এর আগে, বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাতারপাড়া গ্রামের বাজারে পূর্বশত্রুতার জেরে আপন দুই ভাই রমজান মন্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ময়নাতদন্ত শেষে দুই ভাইয়ের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে কান্না আর আহাজারিতে ভেঙে পড়েন নিহতের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও স্থানীয়রা।
তাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনেরা ও স্থানীয়রা ছুটে আসেন নিহতদের বাড়িতে। নিহতদের পরিবারের শোকার্তদের কেউ দেন সান্ত্বনা, কেউ ফেলেন চোখের পানি। মৃত্যুর খবর শুনে সবাই যেন বাকরুদ্ধ। দুই ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে কিছুতেই থামছে না শোকার্ত স্বজনদের আহাজারি।
স্থানীয়রা বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাদেরকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হলো। একসঙ্গে জানাজা নামাজ হয়েছে। নৃশংসভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের এমন মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ নির্বাক। পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে।
নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী বলেন, আমি, আমার আব্বা নজরুল ইসলাম ও আমার চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাতারপাড়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এসময় সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন পিস্তল, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করে। আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সবাইকে আমি চিনি। ৫ মিনিটের মধ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। বাজারের সবাই তাদের চেনেন।
সুরুজ আলী বলেন, ফরিদের ছেলে র্যানিস, মৃত হারান বিশ্বাসের ছেলে মনির উদ্দিন মনো, তার ছেলে ওয়াসিম, মাসুদ, রনির ছেলে রাসেল, আজাবুল, মহাবুলের ছেলে ফারুক, সোহান, সুমন, ইকরামুল, রুবায়ত, আলামিনসহ তাদের ১০-১৫ জন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার চোখের সামনে আগে আমার আব্বাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তারপর আমার চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন।
এদিকে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহতের পরিবার হত্যাকারীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
Posted ২:২৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin