বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইচ্ছাকৃত নম্বর কম দেয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবারও একই ব্যাচের সাথে ক্লাস

কুবি প্রতিনিধি:   |   রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

ইচ্ছাকৃত নম্বর কম দেয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবারও একই ব্যাচের সাথে ক্লাস

 কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর কম দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত সেই শিক্ষককে আবারও একই ব্যাচে স্নাতকোত্তরে ক্লাস দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে উক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের (২০১৬-১৭ শিক্ষার্বষের) শিক্ষার্থীদের ‘এআরসি ৫১৩- কলোনিয়াল অ্যার্কিটেক অফ বাংলাদেশ’ নামের একটি কোর্স রয়েছে। আর এই কোর্সটি পড়াতে দেয়া হয়েছে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোর্শেদ রায়হানকে। তবে মোর্শেদ রায়হান একই ব্যাচে স্নাতক শেষ বর্ষের একটি কোর্স নিয়েছিলেন। সেই কোর্সে ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, এর আগেও আমাদের পরীক্ষার খাতায় তিনি নম্বর কম দিয়েছেন। এবার আবার উনাকে ক্লাস দেয়া হয়েছে।

আমরা অনিরাপত্তায় আছি। এবারও তিনি আগের মত কিছু করবেন না এর নিশ্চয়তা নেই। মাস্টার্সে যদি আবার এমন হয়, তাহলে পরবর্তীতে এর প্রভাব তো আমাদের ক্যারিয়ারে আরো বড় আকারে পড়বে। এ বিষয়ে মোর্শেদ রায়হান বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। আপনারা বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা বলেন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, আমাদের কোর্সগুলো আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। সেই হিসেবে কোর্সটি দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনা নেই যে তিনি (অভিযুক্ত শিক্ষক) কোর্স নিতে পারবেন না। নিরাপত্তাহীনতায় আছেন শিক্ষার্থীরা এ জন্য বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কী পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্কের মধ্যে এই বিষয়টি ঘটাটা খুবই বিব্রতকর। আমার মনে হয় না বর্তমানের যে পরিস্থিতি তাতে কোনো শিক্ষক আর এই ধরনের কোন কাজ সম্পর্কে ভাববে। শিক্ষকরা অনেক বেশি সচেতন থাকবে। শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হলে যদি আমাকে জানায় আমি শিক্ষকের সাথে আলোচনা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, এ বিষয়টি আমি অবগত না। আগামীকাল গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো। ‘ট্যুরিজম এন্ড হেরিটেজ ম্যানেজমেন্ট’ নামক কোর্সে ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর কম দেয়ার অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর উক্ত কোর্সের খাতগুলো জব্দ করে এই কোর্সে বিশেষজ্ঞ কাউকে দিয়ে খাতগুলো পুনরায় মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, শিক্ষক সমিতির কনফারেন্স থাকায় কাজ করা হয়নি। তবে, আমরা আগের খাতাগুলো জব্দ করেছি। ওই কোর্সে বিশেষজ্ঞ কাউকে দিয়ে খাতাগুলো আবারও দেখানো হবে। যদি দেখা যায় নম্বর ২০% এর মধ্যে রয়ে গেছে তাহলে তো সমস্যা থাকে না। কিন্তু যদি এর বাইরে চলে যায় তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখব। শিক্ষার্থীদের যেন ক্ষতি না হয় আমরা সেটাই চাইবো। উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর প্রত্নতত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ৮ম সেমিস্টারের ‘ট্যুরিজম এন্ড হেরিটেজ ম্যানেজমেন্ট’ নামক একটি কোর্সের বিফোর ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট শিট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এই কোর্সটি পড়িয়েছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোর্শেদ রায়হান। দুই পাতার রেজাল্ট শিটে দেখা যায় যায়, ৪০ নম্বরের বিফোর ফাইনাল পরীক্ষার মধ্যে দুটি মিড-টার্ম পরীক্ষা থাকে ১০ নম্বরের। এর মধ্যে দ্বিতীয় মিড-টার্ম পরীক্ষায় দশ নম্বরে এক নম্বরের নিচে পেয়েছেন তিন জন। যাদের ২ জন পেয়েছেন ০.৬৭ ও একজন ০.৩৩। এছাড়াও দুই নম্বরের নিচে ১৩ জন, তিন নম্বরের নিচে ১৭ জন এবং চারের নিচে পেয়েছেন ৪ জন শিক্ষার্থী।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৪২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]