শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানি শিশুর মামলা: রায়ে মা ও বড় মেয়ের সন্তোষ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

সেই জাপানি বংশোদ্ভূত দুই শিশুর মামলায় আদালতের দেওয়া রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো ও তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা।

রায় ঘোষণা শেষে মা নাকানো এরিকো আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের আদালতের রায়ে আমি খুশি। এ আদেশ বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে৷ সবাইকে ধন্যবাদ।’

তার সঙ্গে থাকা বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা বলেন, ‘আমি রায়ে খুশি। অবশেষে আমি আমার দেশে ফিরে যেতে পারবো। অবশ্যই আমি আমার বাবাকেও ভালোবাসি। বাবা জাপানে আমাকে দেখতে আসলে আমি স্বাগতম জানাই।’

রোববার জাপানি বংশোদ্ভূত ঐ দুই শিশুর হেফাজত নিয়ে বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমানের আদালত। ফলে দুই শিশুর ওপর মায়ের হেফাজত প্রতিষ্ঠিত হয়।

মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘আইন মেনে বাবা বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করতে চান বা খোঁজ খবর নিতে চান সেক্ষেত্রে মা অবশ্যই সে দরজা খোলা রাখবেন৷ বাবা এবং মায়ের ক্ষেত্রে কোনো ডিসক্রিমিনেশন (পার্থক্য) নেই। কিন্তু আপাতত বাচ্চাদের কল্যাণ নিশ্চিত হবে মায়ের কাছেই। এটাই হলো কোর্টের সর্বশেষ রায়।’

এদিকে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী নুরুল ইসলাম।

এর আগে, ২২ জানুয়ারি আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর বিচারক মামলার রায়ের জন্য ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। জাপানি মা নাকানো এরিকোর পক্ষে আইনজীবি ছিলেন শিশির মনির।

তারও আগে গত ১৫ জানুয়ারি জাপানি দুই শিশু ও তাদের বাবা মার বক্তব্য শুনেন পারিবারিক আদালত।

উল্লেখ্য, মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

এরপর ঐ দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু ঐ দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ঐ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেয়।

এরপর গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে আসে।

এদিকে সন্তানসহ পালানোর চেষ্টার অভিযোগে জাপানি মা এরিকো নাকানোর বিরুদ্ধে সন্তানদের বাবা ইমরান শরিফ গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন। যা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]