নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পতিত জমিতে শখের বশে নার্সারি বাগান করে সফলতা পেয়েছেন মনির হোসেন। তার বাগানে শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রায় শতাধিক প্রজাতির ফুল-ফল ও বনজ-ভেষজ গাছ। নার্সারিতে প্রতিমাসে যাবতীয় খরচ বাদে তার আয় হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
মনির হোসেন পৌর শহরের টানপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল বাছির মিয়ার ছেলে। পরিবারে তার স্ত্রী, ৩ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। এদিকে তার নার্সারিতে ভালো মানের চারা হওয়ায় সুনাম ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। তার এ সফলতায় ফুল-ফলের বাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকেই। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোকজনরা এখানে দেখতে এসে পরামর্শ নিচ্ছেন। এ কারণে ক্রেতার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
তার নার্সারিতে রয়েছে- লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, কালো গোলাপ, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, ডালিয়া, সূর্য্যমুখি, হাসনাহেনা, গাঁদা, বেলি, কামিনী, গাজরা, রায়বেলী, জিনিয়া, দোপাটি, জিপসি পামটি, মানি প্যান্ট, রক্ত পরোবি, হলুদ এ্যালমন্ডা, বেগুনি এ্যালমন্ডা, এ্যারিকাপাম, সিঙ্গোনিয়াম, বেবি টিয়ারস, হাসনাহেনা, রঙ্গন, শেফালি ফুল, কাঠগোলাপ, দোলনচাঁপা, পর্তুলিকা, রেইন লিলি, ইন্ডোর প্যান্ট ইত্যাদি। ফলের চারার মধ্যে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, কামরাঙ্গা, বেল, জামরুল, আপেল, কমলা মাল্টা, লিচু, পেঁপে, আনাড় ইত্যাদি। তাছাড়া বেলজিয়াম, আকাশি, মেহগনি, শিলকড়–ই জামসহ রয়েছে নানা প্রকারের চারা।
মনির হোসেন বলেন, ছোট বেলা থেকেই গাছ ও প্রকৃতির প্রতি ছিল তার ভালোবাসা। আর ওই ভালোবাসা থেকেই ফুল, ফলজ আর বনজ বৃক্ষের প্রতি তার শখ জন্মে। যখন যেখানে ভালো কোনো গাছের চারা পেতো তা ক্রয় করে নিয়ে আসা হতো। ইউটিউব দেখে দেশি-বিদেশি চারা লাগানো ও পরিচর্যা সম্পর্কে ধারণা নিই। এরপর রামধননগর এলাকাসহ পৃথক দুই স্থানে প্রায় ৭০ শতাংশ দুটি জায়গা ভাড়া নিয়ে দেশি-বিদেশি প্রায় শতাধিক প্রজাতির ফুল-ফল আর বনজ-ভেষজ গাছের বাগান গড়ে তুলেছি।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা, রংপুর, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ওইসব নানা প্রজাতির ফল-ফুল, ভেষজ ও বনজ গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। এরপর দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম আর যত্ন করে এ নার্সারি বাগান গড়ে তুলেছি। আমার এ বাগানে পরিবারের লোকজনরা সহযোগিতার পাশাপাশি দৈনিক মজুরিতে ৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
তিনি জানান, তার এই বাগানে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকার ওপর চারা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন নার্সারিতে ৫-৬ হাজার টাকার চারা বিক্রি হয়। প্রতিমাসে যাবতীয় খরচ বাদে তার আয় হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
চারা কিনতে আসা পৌর শহরের কলেজ পাড়া এলাকার গৃহিণী লিমা আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকেই ফল ও ফুলের গাছের প্রতি তার অন্যরকম ভালোবাসা। ফুল ফলের চারা কেনা তার নেশা। রাস্তার পাশে ফল-ফুলের নার্সারির বাগান দেখলেই তিনি ফল ও ফুলের চারা ক্রয় করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, মনির হোসেনের নার্সারি এরই মধ্যে সৌখিন ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে। তাছাড়া পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি বাগান করেছে তাদের পরমার্শ দেওয়া হচ্ছে।
Posted ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin