নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৬ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মেডিক্যাল সেন্টার চলছে নাপা, এসএমসির ওরস্যালাইনের ওপর ভর করে। নাপা, ওরস্যালাইনের পাশাপাশি ওমিপ্রাজল, ডেসলোরাটাডাইন (অ্যালার্জির ওষুধ) হিস্টারসিনসহ প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ ছাড়া আর কোনো ওষুধই নেই মেডিকেল সেন্টারে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মেডিক্যাল সেন্টারে রয়েছে একটিমাত্র বেড। ফলে একসঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থী আহত কিংবা অসুস্থ হলেই পড়তে হয় বিপাকে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একসঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারালে বেড সংকটে পড়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। এসময় চেয়ার দিয়ে বেড তৈরি করে তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে নেয় মেডিক্যাল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। এমন দৃশ্য নিত্যদিনের।
এখানেই শেষ নয়। ওষুধ আর বেড সংকটের পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসক সংকট। মাত্র দুইজন চিকিৎসক ও একজন প্যারামেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়েই চলছে পুরো চিকিৎসা কার্যক্রম। প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরতরা।
এছাড়াও মেডিকেলে নেই অন্যকোনো সুযোগ-সুবিধা। নেই কোনো ধরনের টেস্ট করার যন্ত্র। কক্ষ বরাদ্দ থাকলেও সেখানে নেই কোনো সরঞ্জাম।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল অনি বলেন, প্রায় আট হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীর জন্য একটি অকেজো মেডিক্যাল নিয়ে চলছে নোবিপ্রবি। পর্যাপ্ত বেড নেই, মেডিসিন নেই, ডাক্তার নেই, আধুনিক কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। এভাবে চলতে থাকলে, যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কারণ, প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও দেওয়া সম্ভব হয় না অনেকসময়।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ হোসেন বলেন, মেডিক্যালের তো কোনো যথাযথ ব্যবস্থাপনায় নেই। মেডিক্যাল সেন্টারের নামে একটা বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে মাত্র। যেখানে চিকিৎসা বলতে শুধু একপাতা নাপা অ্যাক্সট্রা আর গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ পাওয়া যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার মতো যন্ত্রপাতিরও অভাব। আর তার ওপর মেডিক্যাল পরিচালনার জন্য যে জনবল থাকা উচিত সেটাও সেখানে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আজহারুল হক মিজান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মাত্র বেড সত্যিই দুঃখজনক। নামমাত্র মেডিক্যাল সার্ভিস দিচ্ছে মেডিক্যাল সেন্টার। শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল মানেই প্যারাসিটামল সেন্টার। মাথা ব্যথা, জ্বর, ডায়রিয়ার ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ থাকে না মেডিকেল সেন্টারে। অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে গেলে প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন ইত্যাদি জাতীয় প্রাথমিক ওষুধ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। অন্য ওষুধ কিনতে হয় বাহির থেকে। কোন টেস্ট এখানে হয় না। টেস্ট করাতে হয় শহরের প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে। এসব ওষুধ ও টেস্টের ব্যয়ভার বহন করা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, নতুন মেডিক্যাল সরঞ্জাম আনা হবে। বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন আছে। বেড সংকট নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
Posted ৭:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৬ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin