শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপকূলের জলবায়ু সংগ্রামের সাথে দেশের ৫০ তরুণের সংহতি

এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা :   |   মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক,কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও সুপেয় পানির সংকট তৈরি হয়েছে। এসব সংকটকে কেন্দ্রকরে প্রতিদিন নানা ধরণের পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। সংকট ঘিরে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অভিযোজন চর্চাও বৈচিত্র্যময়। আবার, জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব শুধুমাত্র সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকায় নয়, দেশের রাজশাহী, নেত্রকোণা, মানিকগঞ্জ, এমনকি ঢাকাতেও বিদ্যমান। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক আয়োজিত চার দিনব্যাপী (১৮-২১ মার্চ) যুব
জলবায়ু কর্মশালায় অংশ নিয়ে রাজশাহী, নেত্রকোণা, মানিকগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও
ঢাকার ৫০ জন তরুণ এসব তথ্য তুলে ধরেন।
২১ মার্চ বিশ^ বন দিবস এবং আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য দিবসের প্রতিপাদ্যকে
সামনে রেখে আয়োজিত এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা সাতক্ষীরা উপকূলীয়
এলাকা ঘুরে স্থানীয় কৃষক, বনজীবী, জেলে, মুন্ডা-বাগদী, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষক,
স্থানীয় সরকার, জনসংগঠন ও যুব প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জলবায়ু সংকট,
দ্বন্দ্ব এবং টিকে থাকার কৌশল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং সরেজমিনে
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এবং উপকূল মানুষের জীবনসংগ্রাম অবলোকন
করেন। তারা জানান, ৪০ বছর আগে এলাকায় যেসব ধান, মাছ, গাছ, পাখি ও বন্য
জীবজন্তু ছিল, সেসব এখন হারিয়ে গেছে। বদলে গেছে এলাকার দুর্যোগ
পঞ্জিকাও।
কর্মশালায় সমাপনী অনুষ্ঠানে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও স্থানীয়
অভিযোজন বিষয়ে উপকূলের সংগ্রামী জীবনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।
এসময় নেত্রকোণার কলমাকান্দার লেঙ্গুরা গ্রামের মেয়ে সুস্মিতা হাজং তার
এলাকার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তার এলাকা প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত হয়।
পাহাড়ের বালিতে নষ্ট হয় ফসলের জমি, সেই সাথে বাড়ছে পানি সংকট।

রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালার মেয়ে আইরিন হেমব্রম বলেন, তাদের গ্রামে পানির
খুব অভাব। অনাবৃষ্টি আর খরায় প্রতিবছর নষ্ট হয় তাদের ফসলের জমি।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চর জলবায়ু স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্য ফয়সাল হোসেন
বলেন, তাদের এলাকায় নদীভাঙনে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক পরিবার এবং ক্রম্বানয়ে তা
বাড়ছে।
একইভাবে শ্যামনগরের সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের (এসএসএসটি)
সদস্য রাইসুল ইসলাম তুলে ধরেন সাতক্ষীরা উপকূলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা
সংকটের কথা।
কর্মশালার অংশ হিসেবে যুবরা ‘সুন্দরবনকে প্লাস্টিক ও বিষমুক্ত রাখার দাবিতে’
মুন্সীগঞ্জ থেকে কলাগাছিয়া পর্যন্ত জলবায়ু প্রচারাভিযান পরিচালনা করেন।
এসময় যুবরা জানান, বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন কেবল দুর্যোগ থেকে দেশকে
বাঁচায় না বরং বিশে^ও এই বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন পৃথিবীর এক বৃহৎ কার্বণ
শোষণাগার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততা, জোয়ারের উচ্চতা এবং

দুর্যোগ বৃদ্ধির প্রভাব থেকে এই বনকে বাঁচাতে হবে পৃথিবীতে টিকে থাকার
স্বার্থে। দেশের সব তরুণ যুবদেরকেই সচেতনভাবে এই দায়িত্ব নিতে হবে।
কর্মশালার সমাপনী পর্বে অংশ নেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. নিরাপদ বাইন, শ্যামনগর
জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির আহবায়ক কৃষক সিরাজুল ইসলাম, আদিবাসী
নেতা কৌশল্যা মুন্ডা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান
জিএম আবদুর রউফ গাজী, উপকূলীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হালিম,
বারসিকের নির্বাহী পরিচালক সুকান্ত সেন, বারসিক নিউজের সম্পাদক
সিলভানুস লামিন, নগরদারিদ্র্য বিষয়ক গবেষক জাহাঙ্গীর আলম, বারসিকের
উপকূলীয় এলাকা সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, বারসিক কর্মকর্তা বাবলু
জোয়ারদার, রুবিনা পারভীন প্রমুখ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:৫১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]