নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট
গ্রীষ্মের খরতাপের হাঁসফাঁস করছে প্রকৃতি। সারাদেশে নেই স্বস্তির হাওয়া। শীতের রুক্ষতা শেষে প্রকৃতিকে এসেছে নতুন সাজ। সবুজ গাছ গাছালি আর রঙ-বেরঙের ফুলে ভরে গেছে চারপাশ। গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু। এরই মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নতুন করে ফুটেছে ক্যাসিয়া জাভানিকা বা লাল সোনাইল। গোলাপি রঙের এই ফুলে মুগ্ধ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
দেশের মধ্য পূর্বাঞ্চলের বিদ্যাপীঠটি প্রতিটি ঋতুতে সাজে আপন মহিমায়। কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু, রক্তজবা, কাশফুলসহ নানা ফুলে ফুলে বছরজুড়ে ভরে থাকে ক্যাম্পাসটি। তবে এবার নতুন ফুল ক্যাসিয়া জাভানিকায় সেজেছে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। এদেশে এই ফুল লাল সোনাইল নামে পরিচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটক ঘেঁষে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে গোলাপি রঙের এই ফুলের গাছ। থোকায় থোকায় ঝুলছে ভিন্ন রঙের ফুলগুলো। বিকেলে রোদ যখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরা ছুটে আসছে ক্যাসিয়া জাভানিকা ফুল দেখতে। আপন মনে উপভোগ করে। কেউ কেউ ছবি আর সেলফিতে ফ্রেমবন্দি করছে।
জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি প্লাটুনের উদ্যোগে ২০২২ সালের জুন মাসে প্রধান ফটক সংলগ্ন রাস্তার দুপাশে ক্যাসিয়া জাভানিক গাছের ২০টি চারা রোপণ করা হয়। ঢাকার একটি নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল এসব চারা। প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার গাছগুলো দুই বছরেই ফুল জন্ম দিতে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবে তিন বছর সময় প্রয়োজন হলেও এখানে দুই বছরেই ফুল ফুটেছে।
ক্যাসিয়া জাভানিকার বা লাল সোনাইল একটি উষ্ণমণ্ডলীয় ফুল। এছাড়া জাভা ক্যাসিয়া, গোলাপি ঝরনা নামেও পরিচিত এটি। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Cassia javanica।
মূলত গ্রীষ্মকালে এই ফুল ফোটে। বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এ ফুল ফুটে। তবে দেশের জলবায়ুভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যাসিয়া জাভানিকা গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সব জায়গা এই ফুল দেখা না গেলে পাহাড়ি অঞ্চলে পাওয়া যায়।
ক্যাসিয়া জাভানিকা ফুল গাছ রোপণ নিয়ে কথা হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুনের সিইও মো. সামিন বখশ সাদীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একটি বৃক্ষ তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তার ডালে ডালে ফুল ও ফল আসে। ফুল দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। একটি ছোট্ট চারা রোপণ করে তার সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার ওপর সফলতা নির্ভর করে। তেমনই এক সফলতা অর্জন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন।
তিনি বলেন, পরিষ্কার, রঙিন এবং পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন প্রতিবছরই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করে। দেশকে ভালোবেসে পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করার পর এর সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করে থাকে কুবি বিএনসিসি প্লাটুন। এর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ও হলের সামনে কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করেছে। এছাড়াও ক্যাফেটেরিয়ার রাস্তার ডানপাশে সারি সারি বকুল ফুলের গাছও রোপণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ক্যাসিয়া জাভানিকা ফুলগুলো ঢাকার একটি নার্সারি থেকে নিয়ে আসা হয়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে নানাভাবে সাহায্য করেছে। এছাড়া ফুল ফোটার পর উপাচার্যসহ অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী নিয়মিত এখানে আসেন।
Posted ৮:০১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin