নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
লক্ষ্মীপুর রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের একটি গ্রামীণ সড়কে বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে পাশে বসে আছেন দুজন। মোটরসাইকেল, রিকশা-অটোরিকশা আসতে দেখলেই সড়কে নেমে পড়ছেন তারা। এরপর যানগুলোর গতিরোধ করে একটি নির্দিষ্ট টিকিট দিয়ে চাইছেন চাঁদা। কেউ সেই টাকা দিতে না চাইলে বা অপারগতা প্রকাশ করলে আটকে রাখা হয় গাড়ি, দেখানো হয় পুলিশ দিয়ে মামলার ভয়। এভাবেই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখা যায় উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের আলতাফ মাস্টার সড়কের মাছ ঘাট এলাকায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২ মাস ধরে উপজেরার চরবংশী ইউনিয়নের আলতাফ মাস্টার সড়কের মাছ ঘাটের ২০০ থেকে ৩০০ ফুট সামনের সড়কে বাঁশ দিয়ে আটকে যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করছে ‘আলতাফ মাস্টার মাছ ঘাট’ নামে একটি সংগঠন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে অভিযোগ করেছেন এ পথে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা। মাস্টারের নামে প্রতিটি মোটরসাইকেল, রিকশা-অটোরিকশা থেকে আদায় করা হয় ২০-৫০ টাকা। সুযোগ বুঝে ১০০ টাকা বা তারও বেশি নেয়া হয়। বাঁশ বেঁধে সড়কের পাশে চেয়ারে বসে আছেন মো. শরিফসহ দুজন। তাদের হাতে বাঁশের লাঠি। কোনো যানবাহন আসতে দেখলেই দৌড়ে নামছেন সড়কে। গাড়ি আটক করে দাবি করছেন চাঁদা। দাবিকৃত টাকা না দিলেই পুলিশের ভয় দেখিয়ে করা হয়রানি।
চাঁদা আদায়কারী মো. শরিফ বলেন, আলতাফ মাস্টারের নির্দেশে সড়কে বাঁশ দিয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আপনারও প্রতি গাড়িতে ২০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করাতে হবে। এটা সরকারি রাস্তা হলেও নিয়ন্ত্রণ আমাদের। আপনাদের কোনো কথা থাকলে মাস্টারকে ফোনে বলতে পারেন।
কথা হয় মোটরসাইকেল আরোহী তুহিন চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কত কইরা কইলাম আমি সামনের সমজিদে নামাজ পড়তে যাবো। কিন্তু তারপরও টাকা ছাড়া পথ ছাড়ে না তারা। আছরের নামাজের সময় কম থাকায় বাধ্য হয়ে ২০ টাকা দেই তাদের।
আলতাফ মাস্টার বলেন, গতিরোধ করা বা ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়টি মিথ্যা। ভেতরে গাড়ি প্রবেশ করলে যানজট সৃষ্টি হয়। তাই এখানে চেকপোস্ট বসিয়ে শ্রমিকদের ব্যয় মেটাতেই যানবাহন থেকে অল্প পরিমাণে টাকা নেয়া হয়। তবে কারো ইচ্ছার বাহিরে কোনো টাকা আদায় না করার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনের কোনো লোক ছাড়া সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে বা গাড়ি থামিয়ে কোনো ধরনের তল্লাশি চালানোর এখতিয়ার কারো নেই।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে তার জানা নেই। এছাড়া এখানে পুলিশেরও সংশ্লিষ্টতার কোনো বিষয় নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin