নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গত কয়েক দিন ধরে তাবদাহের দাপট অনেকটাই বেড়েছে। সেই সঙ্গে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। এ অবস্থায় রোজাদারদের কাছে ইফতারিতে বেল, আনারস, ডাব, আখের রসের চাহিদাও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বেল, আনারস, ডাব, আখের রস বিক্রির ধুম পড়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে এ উপজেলায় তাবদাহের দাপট দিন দিন বাড়ছে। সকাল থেকেই সূর্যের প্রচণ্ড তাপে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে রুক্ষ। সেই সঙ্গে রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। সূর্যের প্রখর তাপে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এক প্রকার যেন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ঘর থেকে বের হলেই গরম বাতাস বিধছে আগুনের হুংকারের মতো।
অনেকে সামান্য স্বস্তির জন্য ছুটে চলেছেন গাছের ছায়া তলে। গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকুলও। তবে এ তাপদাহের কারণে অনেকটাই বিপাকে পড়ছে রোজাদারসহ অন্যান্য লোকজন। তাপদাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় রোজাদারদের কাছে ইফতারিতে বেল, আনারস, ডাব, আখের রসের চাহিদা বেশ জনপ্রিয়তা হয়ে উঠে।
এদিকে পৌর শহরের সড়ক বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইফতারিতে খাওয়ার জন্য ফলের দোকানে ওইসব ক্রয় করতে ভিড় করছেন।
ক্রেতারা জানান, তাপদাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলের দাম অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে। বাজারে এক হালি বেল ১০০-১৩০ টাকা, আনারস ৮০-১২০ টাকা, প্রতি ডাব ৮০-১০০ টাকা বিক্রি করছেন।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে ডাব, বেল, আনারস ও আখের রসে প্রচুর গুণাগুণ রয়েছে। মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া শিশুসহ সকল মানুষের পরিমাণমত ডাবের পানি, আখের রস পান করা উচিত। তবে খালি পেটে ডাবের পানি পান না করে কিছু খাওয়ার পর এই পানি পান করার উত্তম।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বছরজুড়ে আখের রস, আনারস, ডাব বিক্রি হলেও রোজা আসার পর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই সবের ভালো চাহিদা বেড়েছে। দৈনিক ভালো বিক্রি হচ্ছে।
আখের রস বিক্রেতা সুজন মিয়া জানান, এমনিতেই পাড়া মহল্লায় আখের রসের ভালো চাহিদা রয়েছে। তবে রোজা আসায় তার বিক্রি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। প্রতি গ্লাস আখের রস ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। আর এক লিটার রস বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। দৈনিক ২ হাজার টাকা বিক্রি করছেন বলে জানান।
মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সারা দিন রোজা থাকার পর ইফতারের সময় জুস ও অন্য শরবতের বিকল্প হিসেবে নির্ভেজাল আখের রস খেতে ৩ গ্লাস কেনা হয়েছে। ইফতারের সময় আখের রস খেলে শরীর খুবই ভালো লাগে।
মো. ফরিদ মিয়া বলেন, এ তাপদাহে রোজা থাকার পর শরীর খুবই ক্লান্তি লাগে। আর এই ক্লান্তি দূর করতে ডাব কিনে নিয়ে খাওয়া হচ্ছে। তবে রোজা আসার পর থেকে ডাবের দাম বেড়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, রোজার আগে যেখানে প্রতি পিস ডাব ৭০ টাকা বিক্রি হয়েছে সেই ডাব আজ ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছে।
গৃহিণী আলেয়া বেগম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা অনেক বেশি। ছেলে মেয়েরা সবাই রোজা রেখেছে। তাই ইফতারের সময় খেতে আনারস ও আখের রস কেনা হয়েছে।
ডাব বিক্রেতা কালু মিয়া বলেন, রমজান আসার পর থেকে ডাবের চাহিদা অনেক বেড়েছে। তাছাড়া ডাবের সংকট থাকায় আগের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দিয়ে এখন কিনতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বেল বিক্রেতা মো. মজনু মিয়া বলেন, রোজার শুরুতে স্বাভাবিকভাবে অন্য সময়ের মতো বেল বিক্রি হয়েছে। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
Posted ৭:০৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin