শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমালো আইএমএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমালো আইএমএফ

চলতি বছরের শুরুতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা আশাবাদী হয়ে ওঠেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। তাঁরা বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে যতটা শঙ্কা ছিল, ঠিক ততটা ঘটবে না। কারণ জ্বালানি তেলের দাম কমে আসার পাশাপাশি চীন ও ইউরোপের পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি আঞ্চলিক ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশে আর্থিক খাতে সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে সুদহার বেড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সমীকরণ আবার কিছুটা পাল্টে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। আইএমএফের হিসাবে, আর্থিক খাতে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এ বছর আরও কমে ২ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে, যা ২০০১ সালের পর সর্বনিম্ন। গত বছর প্রবৃদ্ধি হয় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। আর ২০২৪ সালে তা হতে পারে ৩ শতাংশ। গত কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সর্বনিম্ন মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাস এটি।

মঙ্গলবার প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদনে এসব কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার অনেক বাড়িয়েছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দিন দিন পরিষ্কার হয়ে উঠছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নাজুক অবস্থার বিষয়টিও উঠে আসছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও পণ্যমূল্যের চাপ রয়ে গেছে। অনেক দেশে শ্রমবাজারের পরিস্থিতিও ভালো নয়। সব মিলিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আইএমএফ বলেছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার স্থিতিশীল হচ্ছে, কিন্তু পথটি হয়ে যাচ্ছে কঠিন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাত্রা বেড়ে গেলে ফের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে– এমন শঙ্কার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক হারে বেড়ে যায় পণ্যমূল্য। দেশে দেশে দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি। আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে অনেক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়াসহ ঘনীভূত হয় অর্থনৈতিক সংকট। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিনিয়োগ ও উৎপাদন। শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদের অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ২০২৩ সালে হতে যাচ্ছে বিশ্বমন্দা।

গতকাল প্রকাশিত আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে পারে। তবে মূল্যস্ফীতি বাড়ার গতি যতটা বেশি ছিল, তেমনটা হবে না কমার ক্ষেত্রে। তার মানে মূল্যস্ফীতি কমবে খুবই ধীরগতিতে। আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমে আসার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমে হবে ৭ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২০২৫ সালের আগে তা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আনা যাবে না।

এদিকে আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। আগামী অর্থবছরে তা আবার বেড়ে হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াতে পারে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। তবে আগামী অর্থবছরে তা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]