বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন জালু মিয়া ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন জালু মিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন জালু মিয়া ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন জালু মিয়া

জালু মিয়া। বয়স ৫৫। বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউপির চরগঙ্গাপুর গ্রামে। ভিক্ষা করে সংসার চালান তিনি। তবে হেঁটে নয়, ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন তিনি। প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে এ বাড়ি ও বাড়ি ভিক্ষা করে বেড়ান তিনি। ৪ বছর আগে ভিক্ষার টাকা জমিয়ে ঘোড়াটি কিনেন জালু মিয়া। সেই ঘোড়ায় চড়েই এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা করছেন তিনি। এতে প্রতিদিন তার রোজগার হয় ৩০০-৪০০ টাকার মতো। যেখান থেকে ঘোড়ার খাবার কেনার পর যা থাকে তা দিয়ে কোনো রকম চলে জালু মিয়ার সংসার।

জানা যায়, বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউপির দরুন গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে জালু মিয়া। তারা চার ভাই ও এক বোন। জালু মিয়া এক সময় দরুন গ্রামে থাকতেন। কিন্তু সেখানে তার কোনো জমি না থাকায় একই ইউনিয়নের পাশের গ্রাম চর গঙ্গাপুরে বোনের বাড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়ে অন্যের জমিতে পলিথিন আর নারিকেল পাতা দিয়ে তৈরি করেন ঝুপড়ি ঘর। বৃষ্টি হলে জালু মিয়ার পুরো ঘর দিয়ে পানি পড়ে। তবুও রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এখন সেখানেই থাকেন তিনি।

জালু মিয়া বলেন, প্রথম সংসারে স্ত্রীসহ একজন ছেলে ছিল। ওই স্ত্রী ও ছেলে মারা যায়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করি। সেই ঘরে কোনো সন্তান নাই। পরিবারেও স্বচ্ছল কেউ নেই। নেই জমিও। তাই অন্যের জমিতে পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে থাকি। বৃষ্টি আসলে ঘর দিয়ে পানি পড়ে। অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছি।

তিনি আরো বলেন, শরীরের যখন শক্তি ছিল তখন দিনমজুরি কাজ করতাম। এখন বয়স বেড়েছে। শরীরেও শক্তি নেই। তাই বাধ্য হয়েই ভিক্ষা করছি। হাঁটতে কষ্ট হয় বলে ভিক্ষা করে কিছু টাকা জমিয়ে ঘোড়াটি কিনি। ওই ঘোড়ার ওপর বসে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করছি। আমার দাবি; আমাকে একটি সরকারি ঘর দেওয়ার। তাহলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একটু শান্তিতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে পারবো।

জালু মিয়ার প্রতিবেশি কালাম, আমির হোসেন ও শাহানুর বেগম জানান, জালু মিয়া খুব গরীব। ভিক্ষা করেই চলে তাদের স্বামী-স্ত্রীর সংসার। তাদের কোনো জায়গা-জমি না থাকায় অন্যের জমিতে থাকছেন। যে ঘরে জালু মিয়া ও তার স্ত্রী থাকছেন সেখানে অনেক কষ্ট করছেন তারা। তাদের অবস্থা আসলেই খুব খারাপ।

বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউপির চেয়ারম্যান মহিবুল্যাহ মৃধা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে যখন সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা আসে তাকে দেওয়ার চেষ্টা করি। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা সম্ভব তা করি। তবে তার একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]