মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করে দাবি করেন ‘ডাকাত মেরেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করে দাবি করেন ‘ডাকাত মেরেছে’

পরকীয়া সন্দেহে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় কলহ। ঘটনার দিন কাউকে না জানিয়ে কর্মস্থল ফটিকছড়ি থেকে বাড়িতে যান দিদারুল। রাতে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে গিয়ে স্ত্রীকে ফোন দেন তিনি। তখনো ফোনে অন্য কারো সঙ্গে কথা বলছিলেন সায়মা। আর ফোনে অপেক্ষমাণ পেয়ে বেড়ে যায় দিদারুলের সন্দেহের মাত্রা। এরপর কৌশলে রাত ১১টার দিকে স্ত্রীকে পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে প্রথমে পেছন থেকে গলায় ছুরিকাঘাত করেন। এতে সায়মা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বুকের বাঁ পাশে তিনটি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গৃহবধূ সায়মা আক্তারের গলা কাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী দিদারুল আলমকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে এমনই তথ্য। বৃহস্পতিবার স্ত্রী হত্যার বর্ণনা দিয়ে চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আওলাদ হোসেন জুনায়েদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন দিদারুল।

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রাম থেকে সায়মা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বুধবার এ ঘটনায় দিদারুল ও তার বোন রেশমার বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন সায়মার বাবা।

পুলিশ জানায়, লাশ উদ্ধারের সময় ডাকাত তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন দিদারুল। কিন্তু হত্যার ধরন দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। দিদারুল ও তার দুই বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দিদারুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে দিদারুলের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন দিদারুল।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, দিদারুল ফটিকছড়ি এলাকার একটি হাসপাতালে চাকরি করেন। তার স্ত্রী সায়মা আক্তার সীতাকুণ্ডের মুরাদপুরে বাড়িতে থাকতেন। গত এক বছর ধরে পরকীয়া সন্দেহে দুজন দুজনকে সন্দেহ করে আসছেন। হাসপাতালের কোনো নারীর সঙ্গে দিদারুলের অবৈধ সম্পর্ক আছে- এমন সন্দেহ ছিল স্ত্রীর। আবার স্ত্রী বাড়িতে থেকে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে সন্দেহ ছিল দিদারুলের। ফলে উভয়ের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়।

ওসি আরো বলেন, হত্যার পর পালিয়ে যান দিদারুল। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়ে তিনিও ঘটনাস্থলে যান। ঐ সময়ই কর্মস্থল ফটিকছড়ি থেকে ফিরেছেন বলে পুলিশকে জানান তিনি। কিন্তু ফটিকছড়ি থেকে সীতাকুণ্ডে অল্প সময়ের মধ্যে দিদারুলের উপস্থিতিতে সন্দেহ হয় পুলিশের। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দিদারুল জানান- স্ত্রীকে হত্যার জন্য রাউজান থেকে দুটি ছুরি কেনেন তিনি। লাশ উদ্ধারের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ রাউজানের ঠিকানার একটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:১৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]