নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
দক্ষতায় বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও নেপালের কাতারে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। এ অবস্থাকে উদ্বেগজনক মন্তব্য করে শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেছেন, প্রাথমিকের বুনিয়াদ শক্তিশালী না হলে ধসে পড়বে উচ্চশিক্ষা। এ জন্য শিক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি গুণগত মানের প্রতিও জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বাংলা ও ইংরেজি পড়তে পারে না প্রাথমিকের বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই, পারে না গণিতের যোগ-বিয়োগও। তবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার এ বেহাল দশা মানতে নারাজ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
সম্প্রতি সময় সংবাদের সঙ্গে প্রাথমিকের শিক্ষা নিয়ে করা গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর কথা হয় শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনের এ নাজুক অবস্থার রাশ টেনে ধরতে না পারলে মুখ থুবড়ে পড়বে উচ্চশিক্ষা।
ড. মেসবাহ কামাল বলেন, শিশুদের মুখে পড়া যদি খারাপ বা জড়তা হয় তাহলে হাতের লেখাও খারাপ হবে। যদি গোড়ার বুনিয়াদটাই শক্তিশালী না হয়, তাহলে উচ্চশিক্ষা ধসে পড়বে।
এর আগে বিভিন্ন জরিপে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা পড়তে না পারার বিষয়টি উঠে আসলেও, এর সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যতগুলো স্কুল পরিদর্শন করেছি ততগুলো স্কুলে দেখেছি, বাংলা পড়তে পারে না পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আছে এমন স্কুল দেখেনি; হ্যাঁ ইংরেজিতে দুর্বল থাকতে পারে।
বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে কোটি কোটি নতুন বই হাতে পাচ্ছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা। আর্থিক অসংগতি কাটিয়ে শিক্ষায় অংশগ্রহণ বাড়াতে সরকারি উপবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চাহিদা পূরনে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় চালু করা হয়েছে মিড ডে মিলসহ নানা উদ্যোগ। সরকারের এত উদ্যোগের পরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কতটুকু দক্ষতা অর্জন করেছে? বিভিন্ন জরিপের ফল বলছে, পাসের হার বাড়লেও দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা-ওয়েভ ফাউন্ডেশনের জরিপে উঠে আসে- বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও নেপালের কাতারে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির গড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই বাংলা ও ইংরেজি পড়তে পারে না। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১১ শতাংশ ছেলে এবং ১০ শতাংশ মেয়ে বাংলা বর্ণমালা চেনে না। দুই শ্রেণির ১৬.৭৮ শতাংশ ছেলে ১৫.২২ শতাংশ মেয়ে ইংরেজি বর্ণমালা চিনে না। আর প্রাথমিকের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতের যোগ-বিয়োগ করতে পারে না।
কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতে ভারসাম্য আনার পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
Posted ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin