সোমবার ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রলারে ১০ মরদেহ: ৪ জনের ডিএনএ রিপোর্টে নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট

ট্রলারে ১০ মরদেহ: ৪ জনের ডিএনএ রিপোর্টে নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০টি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। এ ঘটনায় চারজনের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় ডিএনএ নমুনা নিয়ে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। সেই রিপোর্ট পুলিশের হাতে পৌঁছেছে।

শনিবার (৮ জুলাই) সেই পরীক্ষার ফল এসে পৌঁছে পুলিশের হাতে। আর তাতেই ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মামলার তদন্ত কার্যক্রমের পরিধিও।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাসের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান নামবিহীন ট্রলারটিকে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। ওই ট্রলারের হিমঘর থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

ঘটনার পর ১০ মরদেহের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়া ছয়জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয় ২৪ এপ্রিল। এই ছয়জন হলেন: মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে ট্রলার মালিক সামশুল আলম প্রকাশ সামশু, চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ, চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের মুসা আলীর ছেলে গণি ওসমান, একই ইউনিয়নের মোহাম্মদ হোসানের ছেলে নুরুল কবির।

কিন্তু বাকি ৪টি মরদেহ সংরক্ষণ করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। ওই সময় চারজনের মরদেহ শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪) বলে জোর দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার ফলে মরদেহ ৪টি তাদের কারো না বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস জানান, যে চারজনের মরদেহ বলে স্বজনদের পক্ষে জোর দাবি করা হয়েছিল তাদের কারো মরদেহ নয় এগুলো। ওই সময় অতিরিক্ত কিছু স্বজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। এই তিনজনই জেলে। তাদের বাড়ি মহেশখালীতে।

তিনজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিক না জানালেও তিনি জানান, রোববার বিকেলে এই ৩টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। একটির পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় পৌরসভার মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

এর মধ্য দিয়ে ঘটনার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জানান, ওই ঘটনায় নিখোঁজ থাকা যে স্বজনরা চারজনের মরদেহ বলে জোর দাবি করেছিলেন এই ৪ ব্যক্তি এখন কোথায়? জীবিত না মৃত? আর নতুন শনাক্ত হওয়া তিনজন কি একই ট্রলারে করে সাগরে গিয়েছিলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর নতুন করে জানা জরুরি। তাহলে ট্রলারে ১০ জন ছিল নাকি তারও বেশি মানুষ ছিল। নতুন এসব প্রশ্ন নিয়ে মামলার তদন্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানান দুর্জয় বিশ্বাস।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ আটজনকে গ্রেফতার করেছে। যার মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন। এরা হলেন: মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন। তবে গ্রেফতারের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন জবানবন্দি দেননি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:২২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]