নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
বিশ্ববাজারে আর্থিক মন্দার মধ্যেই ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৯ দশমিক ৮৮ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এতে দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, করোনা মহামারির মধ্যেও বিশ্বের যে তিনটি দেশ মাছ উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।
মৎস্যখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ২০২২’ শীর্ষক বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চাষের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে (ছয় বছর ধরে পঞ্চম অবস্থানে ছিল) রয়েছে। এটি মৎস্য খাতের অনন্য এক অর্জন। এছাড়াও স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইলিশ আহরণে প্রথম (বর্তমানে ইলিশের মোট উৎপাদন ৫.৭১ লাখ মেট্রিক টন) অবস্থানে রয়েছে।
মৎস্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে রফতানি করা মৎস্যজাত পণ্যের প্রায় ৭০ ভাগ ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্টস। বাংলাদেশ থেকে সাধারণত আইকিউএফ, কুকড, ফিস ফিলেট ভ্যালু অ্যাডেড মৎস্য জাতীয় পণ্য রফতানি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ থেকে মূলত গলদা, বাগদা, হরিণাসহ বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি, স্বাদু পানির মাছ যেমন- রুই, কাতলা, মৃগেল, আইড়, টেংরা, বোয়াল, পাবদা, কৈ প্রভৃতি এবং সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ভেটকি, দাতিনা, রূপচাঁদা, কাটল ফিস, কাঁকড়া রফতানি হয়ে থাকে। এছাড়াও শুঁটকি, মাছের আঁইশ এবং চিংড়ির খোলসও রফতানি হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরিত কাঁকড়া ও কুঁচিয়া বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য ৫২টির বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে। এসব দেশের মধ্যে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, ফ্রান্স, আমেরিকা, জাপান ও রাশিয়া অন্যতম। নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ।
মৎস্য অধিদফতর বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট মৎস্য উৎপাদিত হয়েছে ৪৭ দশমিক ৫৯ লাখ মেট্রিক টন যা ২০০৭-০৮ অর্থবছরের মোট উৎপাদনের (২৫.৬৩ লাখ মেট্রিক টন) চেয়ে ৮৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি এবং ২০১০-১১ অর্থবছরের মোট উৎপাদনের (৩০.৬২ লাখ মেট্রিক টন) চেয়ে ৫৫ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। মাথাপিছু দৈনিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ চাহিদার (৬০ গ্রাম/দিন/জন) বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। দেশের মোট জিডিপির ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ মৎস্য উপ-খাতের অবদান। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৪ লাখ নারীসহ ১৯৫ লাখ বা প্রায় ১২ শতাংশের অধিক মানুষ এ সেক্টরের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত থেকে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে মৎস্য খাতের অবদান সর্বজন স্বীকৃত। পাশাপাশি বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য খাত ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে।
Posted ২:০৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin