নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত চিকিৎসকরা হলেন নাজমুল হক ও গুনময় পোদ্দার। অন্য দুজন হলেন উপশম হাসপাতালের চেয়ারম্যান মায়া বেগম ও ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) জসিম উদ্দিন।
রোববার বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল রামগঞ্জ আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন এ নির্দেশ দেন। নিহত ফাতেমার স্বামী মনর আলী আদালতে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
সন্ধ্যায় বাদীর আইনজীবী মো. রেহান ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অচেতন (অ্যানেস্থেসিয়া) না করেই ভিকটিমের অস্ত্রোপচার (সিজার) করা হয়। এতে ভিকটিম মারা যায়। এ ঘটনায় বাদী আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি আমলে নিয়ে বিচারক রামগঞ্জ থানার ওসিকে মামলা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
সন্ধ্যায় আদালতের পেশকার মোরশেদ আলম বলেন, দুই চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিচারক নেওয়ার জন্য মামলার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা কপি আগামীকাল রামগঞ্জ থানার ওসি বরাবর পাঠানো হবে।
অভিযুক্ত ডা. নাজমুল হক রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট ও গুনময় পোদ্দার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এছাড়াও নাজমুল রামগঞ্জের নিউ উপশম জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও গাইনী বিশেষজ্ঞ এবং গুনময় উপশম হাসপাতালে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এজাহার সূত্র জানায়, গত ৪ জুলাই বাদী মনর আলীর স্ত্রীর ফাতেমার প্রসব ব্যাথা উঠে। এতে তাকে রামগঞ্জে উপশম হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে হাসপাতারের ব্যবস্থাপক জসিম জানায় ফাতেমাকে দ্রুত সিজার করাতে হবে। গাইনী বিশেষজ্ঞ নাজমুলের অধীনে তার সিজার হবে।
ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ডা. নাজমুল ও গুনময় অপারেশন কক্ষে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর ফাতেমা প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে উঠে। পরে নাজমুল অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে জানায় প্রসূতি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। একপর্যায়ে তাকে (ফাতেমা) অপারেশন কক্ষ থেকে বের করা হয়।
এসময় ফাতেমা বাদীসহ স্বজনদের জানায়, ডা. নাজমুল ও গুনময় তার কলিজা ছিঁড়ে ফেলেছে, পেটে প্রচন্ড যন্ত্রণা। তাকে অচেতন (অ্যানেস্থেসিয়া) না করেই পেটে চুরি চালানো হয়েছে। এতে চিৎকার দিলে ডা. গুনময় তার মুখ ও হাসপাতালের নার্সসহ কর্মচারীরা হাত-পা চেপে ধরে। পরে ডা. নাজমুলের নির্দেশনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফাতেমাকে কুমিল্লা মেডিকেলে রেফার করে। সেখানে নেয়ার পথেই ফাতেমা মারা যায়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রামগঞ্জের আল ফারুক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডা. গুনময় পোদ্দার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি ডা. নাজমুল হককে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু অন্য আরেকটি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Posted ৫:১৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin