বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কঠিন হচ্ছে বাণিজ্য সংগঠন গড়ার শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৭ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

কঠিন হচ্ছে বাণিজ্য সংগঠন গড়ার শর্ত

চাইলেই আর বাণিজ্য সংগঠন করা যাবে না। এ জন্য অনেক কঠিন শর্ত পূরণ করতে হবে। নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালায় এসব শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী আজ সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এতে বিদেশি ব্যবসায়ীদের নিয়ে যৌথ বাণিজ্য সংগঠন করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

‘বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২৩’ সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সমকালকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আইনটিকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। বেশ কিছু শর্ত যুক্ত করে বিধিমালা করা হচ্ছে। এটি কার্যকর হলে নামসর্বস্ব কোনো বাণিজ্য সংগঠন হবে না আর। তিন দশক পর নতুনভাবে বিধিমালা হচ্ছে।

জানা গেছে, তিন দশক পর এবার আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। আইনের খসড়ায় এফবিসিসিআইর পরিচালক ৮০ জন থেকে কমিয়ে ৬৮ জন করার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যমান আইন ও সংশোধনীর খসড়ায় এবার অনেক শর্ত পূরণের কথা বলা হয়েছে, যা আগে ছিল না।

দেশে এখন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ১৯৯৪ কার্যকর রয়েছে। এটি করা হয় ১৯৮৫ সালের বিধিমালা বাতিল করে। উভয় বিধিমালাই করা হয় ১৯৬১ সালের বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশের ভিত্তিতে। সেই অধ্যাদেশ বাতিল করে ২০২২ সালে নতুন বাণিজ্য সংগঠন আইন প্রণয়ন করে সরকার। এ আইনের ভিত্তিতেই নতুন বিধিমালা করা হচ্ছে।

বিধিমালার খসড়া অনুযায়ী বাণিজ্য সংগঠন করতে অন্তত ১১টি সমজাতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠানকে একত্রে নামের ছাড়পত্রের জন্য বাণিজ্য সংগঠন মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করতে হবে। সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লিমিটেড কোম্পানি, এক ব্যক্তির কোম্পানি এবং অংশীদারি প্রতিষ্ঠান তিনটাই থাকতে পারবে। নামের ছাড়পত্রের মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। বিদ্যমান বিধিমালায় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা নেই। নামের ছাড়পত্র নেওয়া ও এর মেয়াদ থাকার কথাও নেই। তিন-চারটি প্রতিষ্ঠান একত্র হয়েও লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বর্তমানে দুই বা এর বেশি বাণিজ্য সংগঠন যদি একই উদ্দেশে লাইসেন্স নেয়, তাহলে বাণিজ্য সংগঠন মহাপরিচালক এগুলোর লাইসেন্স বাতিল করে একত্রীকরণের আদেশ দিতে পারবেন। কোনো বাণিজ্য সংগঠন বা এফবিসিসিআই একত্রীকরণের জন্য আবেদন করলেও এ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন মহাপরিচালক।

নতুন বিধিমালা হলে বাণিজ্য সংগঠন করা কঠিন হয়ে যাবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মালেকা খায়রুন্নেসা সমকালকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্দেশে আইনটিকে যুগোপযোগী করা হয়েছে, বিধিমালাও এখন সে রকমই হবে। আমরা অবশ্যই চাই যে নামসর্বস্ব কোনো বাণিজ্য সংগঠন যেন না থাকে।

বর্তমানে এফবিসিসিআইর পর্ষদ ৮০ জনের। এসব পদ আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে জেলাভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা চেম্বার থেকে ৪০ জন পরিচালক হয়েছেন। বাকি ৪০ পরিচালক পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের। তবে ৮০ জন পরিচালকের মধ্যে ৩৪ জন মনোনয়নের মাধ্যমে ভোট ছাড়াই পদ পান। বাকি ৪৬ জনকে সরাসরি সদস্যদের ভোটে জিতে আসতে হয়।
নতুন বিধিতে চেম্বার গ্রুপ থেকে ৩২ জন ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রপ থেকে ৩২ জন করে মোট ৬৪ জন পরিচালক এবং দুটি সংগঠন থেকে সরকার মনোনীত দু’জন করে চারজন পরিচালক অর্থাৎ মোট ৬৮ জন পরিচালক নিয়ে এফবিসিসিআইর পর্ষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নেওয়া প্রায় এক হাজার বাণিজ্য সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ চেম্বার ছাড়াও মেট্রো চেম্বার ৭টি, উইমেন চেম্বার ১৮টি, যৌথ চেম্বার ৫৪টি, পেশাজীবী গ্রুপ বা সমিতি ১৮৭টি, জেলা চেম্বার ৬৪টি ও উপজেলা চেম্বার ২টি এবং অ্যাসোসিয়েশন ৪৫১টি ও অলাভজনক সংগঠন ১৭০টি। এসব সংগঠনের বেশির ভাগেরই ওয়েবসাইট নেই। ফলে এগুলোর সম্পর্কে সাধারণ কোনো তথ্যও কেউ জানতে পারেন না।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:১৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৭ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]