বুধবার ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গবাদিপশু নিয়ে এক ঘরে, অনাহারে দিন কাটছে বানভাসিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে তিস্তার পানি। ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। এক ঘরে গবাদিপশুর সঙ্গে খেয়ে না খেয়ে অনাহারে দিন কাটছে নিম্নাঞ্চলের বানভাসিদের।

শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের আমন ক্ষেত ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকায় রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে লালমনিরহাটের ১৫টি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না পর্যন্ত করতে পারছে না পানিবন্দি অধিকাংশ পরিবার। খেয়ে না খেয়ে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের অভাব। সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হলেও তা এখনো পানিবন্দি এলাকায় পৌঁছায়নি। এছাড়া গবাদিপশু পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকেই বাধ্য হয়ে বন্যার আতঙ্কে বাড়ি-ঘর ভেঙে নিয়ে আসছেন নৌকায়। আর আশ্রয় নিচ্ছেন বাঁধের রাস্তায়। সেখানেই রান্না করে অতিকষ্টে খাচ্ছেন তারা। আর বিদ্যালয়ে চলাচলের রাস্তা পানিতে তলিয়ে থাকায় শিক্ষার্থীদের হচ্ছে নানা সমস্যা।

লামনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক রব্বানী (৪৫) বলেন, তার চার বিঘা জমির আমন ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর গরু-ছাগল বাঁধের উঁচু স্থানে রেখে দিয়েছেন। যদি পানি আরও বাড়ে তাহলে বাড়ি ছেড়ে তাকেও যেতে হবে উঁচু স্থানে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন জানান, তিস্তা নদীতে সামান্য পানি বাড়লেই তা উপচে পড়ে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে। নদী খনন না করায় তিস্তার বুকে বালু ভরাট হয়ে প্রায় সমতল হয়ে গেছে। এ কারণে তিস্তায় পানি বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আনতে তারা প্রস্তুত আছেন।

লালমনিরহাটে এক ঘরে গবাদিপশু নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে বানভাসিদের। ছবি: সময় সংবাদ

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসছে। এ কারণে তিস্তা নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। পানির চাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খোলা রাখা হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]