নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
সারি সারি দাঁড়িয়ে আছেন তারা। নেই বসার কোনো স্থানও। সবার দৃষ্টি একদিকে। মাঝে মাঝে তারা উল্লাস করছেন, আবার একটু পর হয়ে যাচ্ছেন নীরব। সে নীরবতায় পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে গাড়ি। সেদিকে খেয়াল করছেন না কেউই। তাদের কাছে এক সেকেন্ড অন্যদিকে তাকানো কিংবা চোখ সরানো মনে হয় বড় ক্ষতি।
প্রিয় পাঠক বলছি, ঢাকার অলি-গলিতে বসে-দাঁড়িয়ে এশিয়া কাপের ম্যাচ দেখা দর্শকদের কথা। বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ দল। ময়দানি এই লড়াইটি শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৩টায়।
বিকেল বেলায় খেলা শুরু হলেও ঢাকায় এ ম্যাচের উত্তাপ পড়ে রাতে। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে সাকিব-তাসকিনদের এশিয়া কাপের নিজেদের প্রথম ময়দানি লড়াই দেখছেন ঢাকার সবস্তরের ক্রীড়াপ্রমী। রাস্তার ধারে কিংবা টিভির দোকান অথবা ইলেকট্রনিকের শো-রুম, যে যেখানে টিভির স্কিন দেখছেন, সেখানেই চোখ বুলাচ্ছেন। খুঁজে নিচ্ছেন সাকিব-মুস্তাফিজদের ময়দানি লড়াইয়ের দৃশ্য।
অফিস শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে চোখ আটকে যায় মিরপুরের একটি শোরুমে। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ উপভোগ করছেন গোটা বিশেক খেলাপ্রেমী। কেউ অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ-বা কয়েকটা বল দেখে নিজ গন্তব্যস্থলে হাঁটা দিচ্ছেন।
ঢাকার একটি ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করেন জীবন আহমেদ। ব্যক্তিগত কাজে মিরপুরে এসেছিলেন। বাসায় ফিরবেন, সেজন্য হাঁটা দিলেন। পথিমধ্যে খেলা দেখার এই শোরুম পড়ে। বাংলাদেশের খেলা মিস করবেন না জানিয়ে ডেইলি বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কাজে মিরপুরে এসেছিলাম। বাসার উদ্দেশে হেঁটে চলছি। একটু এসে দেখলাম টিভি স্ক্রিনে খেলা দেখছেন সবাই। অনেকের সঙ্গে টিভি স্কিনে খেলা দেখার মজাই আলাদা। তাই কিছু সময়ের জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। কয়েকটা ওভার দেখে চলে যাবো’।
জীবনের বক্তব্য শেষ হতে এক রিকশাচালক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মামা বাংলাদেশের টার্গেট কত?’ তাকে স্কোর বলে দিয়ে তার কাছে খেলা দেখার অনুভূতি জিজ্ঞাসা করলে রিকশাচালক রবিউল মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের খেলা সব সময় দেখি। রিকশা চালাই তাতে কী। সাকিব-তামিমদের খেলা দেখা হয়। রিকশা চালানোর সময় টিভি দেখার সুযোগ না পেলেও ফোনের রেডিওতে বাংলাদেশের খবর শুনি। ভালো লাগে’।
বাংলাদেশ দলের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে রিকশাচালক রবিউল বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো খেলুক। সাকিব ভাইয়ের খেলা দেখি। ভালো বোলিং করেন। ব্যাটিংও করেন ভালো। বাংলাদেশ ভালো খেলে প্রত্যেকটি ম্যাচ জিতুক এই আশা করি’।
শুধু মিরপুরে নয়, ঢাকার অলি-গলির অনেক জায়গায় এশিয়া কাপের খেলা দেখায় মেতে উঠেছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। অনেক জায়গার এমন দৃশ্য দেখে মনে হবে- এ যেন একখণ্ড পাল্লেকেলে।
Posted ২:১৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin