রবিবার ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাল-পুরিতে বদলেছে জসিমের ভাগ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

ডাল-পুরিতে বদলেছে জসিমের ভাগ্য

চুলায় জ্বলছে আগুন। বড় আকৃতির একটি কড়াইয় তেলে ভরপুর। একসঙ্গে ভাজা হচ্ছে ছোট ছোট অসংখ্য পুরি। সেই কড়াই ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। দোকানের সামনে ভেতরে পুরির জন্য অপেক্ষা করছেন ক্রেতারা। কড়াইতে পুরি ভাজা শেষ হতে না হতেই গরম ডালপুরি চলে যাচ্ছে অপেক্ষমাণ ক্রেতাদের হাতে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে শুটকির ভর্তা, পেঁয়াজ বা শসার সালাদ। প্রতিদিন সকাল-বিকেল-সন্ধ্যা যেন ক্রেতাদের চাপে দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের।

এমনই এক দৃশ্য চোখে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজিরবাজার এলাকায় জসিম ভূঁইয়ার হোটেলে। এরই মধ্যে এই হোটেলটি গোটা উপজেলার মধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। জসিম উপজেলার হীরাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার ছায়েদ ভূঁইয়ার ছেলে।

এই হোটেলের মধ্যে সাধারণত ডালপুরি, শিঙারা, পেঁয়াজু আর চা বিক্রি করা হয়। প্রতি ১ পিস ডালপুরি দুই টাকা, পেঁয়াজু এক টাকা, শিঙারা পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি চা ও বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকায়।

ডালপুরি-পেঁয়াজু আর শিঙারার মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষের চাহিদা রয়েছে ডালপুরিতে। ছোট আকারের পুরি ভিন্ন স্বাদের হওয়ায় সবসময় হোটেলে ভিড় লেগে থাকছে। গত প্রায় ২৪ বছর ধরে এই হোটেলে এসব খাবার বিক্রি করছেন জসিম ভূঁইয়া। এই হোটেলে দৈনিক ১৫-১৭ হাজার টাকা বিক্রি হলেও শুধুমাত্র পুরি বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকার উপর।

কঠোর পরিশ্রম, নিরলস প্রচেষ্টা আর আন্তরিকতার দ্বারা তিলে তিলে তিনি এই হোটেলটি গড়েছেন। যাবতীয় খরচ বাদে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকার উপর তার আয় হয় বলে জানান তিনি। ফলে এই হোটেল ব্যবসায় বদলে যায় তার ভাগ্য।

হোটেল মালিক জসিম ভূঁইয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলীর এক মামার কাছে হোটেলে কাজ করতাম। সেখানে মামার হোটেলে বেশ কয়েক বছর পুরি, শিঙারা, পরোটা তৈরির কাজ করেছি। একটা সময় ঐ জায়গা থেকে এসে নিজ এলাকায় কিছু করার চেষ্টা করি।

একপর্যায়ে গাজীর বাজার এলাকায় ভাড়ায় একটি হোটেল নেই। ঐ হোটেলে ডালপুরি, শিঙারা, পেঁয়াজু আর চা বিক্রি শুরু করি। প্রথম প্রথম হোটেল টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছিল। পরে আস্তে আস্তে আমার তৈরি করা খাবার সুস্বাদুর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। বর্তমানে এই হোটেলটি ছোট-বড় সবার কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্তের লোকজন নিজেরা খাচ্ছেন অনেকে বাড়ির জন্য ডালপুরি নিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি টেবিলে লোকজন বসে পুরির জন্য অপেক্ষা করছেন। কড়াই থেকে গরম পুরি তোলা মাত্র প্রতিটি প্লেটে ১০টি করে পুরি পরিবেশন করা হচ্ছে ক্রেতাদের টেবিলে। পুরির সঙ্গে ফ্রি দেওয়া হচ্ছে শুটকির ভর্তা, সঙ্গে রয়েছে সালাদও। যা খাবারের স্বাদকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

ডালপুরি খেতে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুটকির ভর্তা দিয়ে ডালপুরি খেতে খুবই ভালো লাগে। প্রায় সময় এখানে আসা হয়। আজ নিজে খেলাম এবং বাড়ির জন্য কেনা হয়েছে।

উপজেলার কুড়িপাইকা গ্রামের সবুজ মিয়া বলেন, এখানকার পুরি ছোট-বড় সবার কাছে খুবই প্রিয়। তাছাড়া ভর্তায় অন্যরকম স্বাদ। সুযোগ পেলে এখানে পুরি খেতে আসি।

হোটেল মালিক জসিম ভূঁইয়া বলেন, এখানে সকাল আর সন্ধ্যা মানুষের চাপ থাকে বেশি থাকে। প্রতিদিনই অনেক লোকজন ডালপুরি খেতে আসে। আমি নিজ হাতে পুরি, শিঙারা আর পেঁয়াজু তৈরি করি। আসলে মুখরোচক স্বাদের কারণে অল্পদিনেই জনপ্রিয়তা পায় এটি। বিশেষ করে যুবকদের কাছে এটি বেশি জনপ্রিয়। ছুটির দিন অর্থাৎ শুক্রবার কিংবা কোনো উৎসব থাকলে লোকজনের ভিড় বেড়ে যায়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]