নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
শরীয়তপুরে সন্তান প্রসবের পর হাসপাতালেই এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালের শয্যার পাশে বসে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দেন তিনি।
এর আগে, বুধবার সকালে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি। জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাতুল ফেরদৌস শরীয়তপুর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। তার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল শহরের সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছর সেপ্টেম্বরে শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশাভোগ এলাকার সাঈদ খানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে জান্নাতুলের বিয়ে হয়। এরমধ্যে তিনি সন্তানসম্ভবা হন। এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যেই তার প্রত্যাশিত প্রসবের দিনক্ষণ (ইডিডি) এগিয়ে আসছিল। গত মঙ্গলবার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর জান্নাতুলের প্রসব বেদনা ওঠে। রাতে স্বজনরা তাকে শহরের মেট্রো ক্লিনিকে ভর্তি করেন। বুধবার সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জান্নাতুল একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এদিন তার কোনো পরীক্ষা ছিল না। তবে বৃহস্পতিবার ছিল ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে পরীক্ষায় দেবেন, তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তখন তার স্বজনরা বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানান। জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ হাসপাতালের শয্যায় পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেন।
মেট্রো ক্লিনিকের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জয়ন্ত কুমার কর্মকার জানান, নবজাতক ও জান্নাতুল সুস্থ আছেন। তিন-চার দিনের মধ্যেই তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন।
শরীয়তপুর সদরের ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী সন্তান প্রসব করার পরেই পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে আবেদন করেন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ও পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতালেই পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই পরীক্ষার্থী যে কয়দিন হাসপাতালে থাকবেন, সেখান থেকেই তিনি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তার পরীক্ষার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি।
জান্নাতুলের ননদ মাহিন খান বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রীর পড়ালেখা করার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আছে। তার এমন মনোবল দেখে আমরা অভিভূত। সে যদি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে আমাদের পরিবার সব সময় তার পাশে থাকবে।
Posted ৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin