নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
নিরাপদ সবজির গ্রাম গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের বিরতুল ও গারারিয়া। এই দুই গ্রামে চাষিরা কোনো প্রকার বালাইনাশক ছাড়াই বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সবজির চাষ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে এই গ্রামগুলোর চাষ করা কাকরোলের রয়েছে বেশ চাহিদা। রাজধানীসহ দেশের আশপাশের বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়েও যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে।
উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের বালু নদী তীরবর্তী গ্রাম বিরতুল ও গাড়ারিয়া। ঢাকার লাগোয়া এই উপজেলার গ্রাম দুটির নিরাপদ সবজির চাহিদা দেশজুড়ে। বিশেষ করে এই গ্রামে চাষ করা কাকরোল উৎপাদন আশেপাশের গ্রামের চাষিদের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। একই ইউনিয়নের বাগদী, পারওয়ান ও পানজোরা গ্রামের চাষিরাও চাষ করছেন বিষমুক্ত সবজি।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেক্স ফেরোমান ফাঁদ, হলুদ স্টিকি ট্র্যাপ, হাত পরাগায়ন, আইপিএ প্রযুক্তি, ব্যাগিং, সুস্থ ও ভালো বীজ, সুষম সার, মালচিং, ভার্মি কম্পোস্ট এবং জৈব বালাইনাশকের মাধ্যমে বিরতুল ও গাড়ারিয়া গ্রামে নিরাপদ সবজি কাকরোল চাষ হচ্ছে। ওই দুই গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামের চাষ করা বিষমুক্ত রাজধানীসহ আশেপাশের বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়েও সেই কাকরোল যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের বিরতুল গ্রামের কাকরোল চাষি কালিপদ চন্দ্র দাস বলেন, আমি এই বছর সোয়া বিঘা জমিতে কাকরোল চাষ করেছি। ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো আয় করেছি।
একই গ্রামের আরেক কাকরোল চাষি প্রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, কাকরোলের চাহিদা থাকায় বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা থাকছে না এবং যাতায়াত খরচ নেই। ফলে লাভের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।
কাকরোল চাষি নীহার চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের গ্রামের সবজি বিষমুক্ত সবজি। এই গ্রামের কাকরোল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে।
বাগদী, পারওয়ান ও পানজোরা গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, শুধু নিরাপদ সবজির গ্রাম নয়। নিরাপদ ওই সবজির গ্রামগুলোর সবজি দিয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত একটি করে নিরাপদ সবজি বাজার করলে আমরা যারা কৃষক আছি তারা সবজি সিন্ডিকেটের বাহিরে গিয়ে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি করতে পারব।
কালীগঞ্জ উপ-সহকারী (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ কালীগঞ্জ থেকে আমরা বিরতুল ও গাড়ারিয়া গ্রামের কাকরোল চাষিদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। গ্রাম দুটিতে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বালাইনাশক ছাড়াই কাকরোল উৎপাদন করছে। এ জন্য দেশের বাইরের ক্রেতাদের এর বিশেষ চাহিদা রয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, গ্রীষ্মকালীন সবজি হিসেবে কাকরোল একটি জনপ্রিয় সবজি। সাধারণত খরিপ-১ এবং খরিপ-২ এই দুই মৌসুমে এই সবজিটি চাষবাদ করা হয়। আমাদের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি সম্ভাবনাময় সবজি হচ্ছে কাকরোল।এই সবজি কালীগঞ্জ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা বিরতুল ও গাড়ারিয়া এই দুটি গ্রামকে নিরাপদ সবজির গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কৃষিকে বিষমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ। এতে কৃষকদের ভালো সাড়াও মিলছে।
Posted ৮:১১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin