শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে মাষকলাইয়ের বড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

বগুড়ার সোনাতলার পার্শ্ববর্তী গ্রাম বাইগুনিতে মাষকলাইয়ের বড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। এ গ্রাম দিয়ে সকাল বেলা হেঁটে গেলে দেখা মিলবে নীল জালে সাদা সাদা বড়ি রোদে শুকানো হচ্ছে। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বছরের এ সময়ে বড়ি বানানো হয়।

আর বাইগুনি গ্রামে তৈরি বড়ি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হয়ে থাকে। এ থেকে বাড়তি আয়ের সুযোগ মেলে গ্রামের নারীদের। বড়ি বানানোর কাজে নারীরা সরাসরি যুক্ত থাকলেও বিক্রির দায়িত্ব এসে পড়ে পুরুষদের উপর।

মনোশ সাহা (৭০) নামে এক ব্যক্তি বলেন, আগে এ গ্রামের প্রায় ১০০ পরিবার মাষকলাইয়ের বড়ি বানাতো। তবে কালের পরিক্রমায় এখন তা কমে গেছে। তবে এখনও বেশ কয়েকটি পরিবার বড়ি বানায়।

মাষকলাইয়ের বড়ি বানানোর সময় কথা হয় আঞ্জনা রানী সাহার (৪৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ধান মাড়াইয়ের পরপর যখন হাল্কা শীত পড়া শুরু হয় তখনই বড়ি বানানোর সময়। তবে বড়ি বানানো সহজ নয়। ধৈর্য আর পরিশ্রমের কাজ। বড়ি বানাতে প্রথমে মাষকলাই সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। সকালে সেগুলোর খোসা ছাড়াতে হয়। তারপর শিল-পাটায় বেটে ভালো করে ফেনাতে (গুলাতে) হয়। হাতের কারিশমায় ছোট ছোট গম্বুজ আকৃতি করে জালের ওপর দিয়ে রোদে শুকাতে হয়। ভালো রোদ পেলে দুদিনেই শুকিয়ে যায়। তখন খাওয়ার উপযোগী হয়।

সূর্য রানী (২৮) বলেন, বড়ি বানানোর জন্য আমরা শিল-পাটায় মাষকলাই বেটে থাকি। তবে এটি অনেক কঠিন কাজ। বেশি কালাই বাটলে হাত ব্যথা হয়। ১০ কেজি কালাই বাটতেই দুইজন লোকের তিন-চার ঘণ্টা লেগে যায়। তবে যারা অল্প বড়ি বানান, তারা অনেকে ব্লেন্ডার ব্যবহার করেন।

তবে এ কষ্টের কিছুটা লাঘব হয়েছে। গ্রামে এখন কলাই বাটার মেশিন এসেছে। মেশিনের সাহায্যে সহজেই বাটা যায়। মেশিনে এক ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ মণ কলাই বাটা সম্ভব। গ্রামের অনেকেই এখন মেশিনে কলাই বাটেন।

পপি সাহা (৩০) বলেন, প্রতিদিন আমরা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি বড়ি বানাই। এর অধিকাংশ গ্রামের হাটেই বিক্রি হয়ে থাকে। তবে অনেকে বাড়িতে এসেও নিয়ে যান।

সাগর সাহা নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বাইগুনি গ্রামে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ মণ বড়ি বানানো হয়। যা দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এছাড়া আমাদের কাছে বিভিন্ন জেলা থেকে বড়ি বানানোর অর্ডার আসে। কেউ কেউ আবার নিজেই হাটে বিক্রি করে থাকেন। তবে বর্তমানে অনলাইনেও এ গ্রামের বড়ি বিক্রি হচ্ছে।

সারওয়ার হোসেন নামে এক পাইকারি বিক্রেতা জানান, তিনি প্রতি শীতের মৌসুমে প্রায় ১০০ মণ বড়ি বিক্রি করে থাকেন। এগুলো তার পরিবারই তৈরি করে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:২৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]