নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
আজ ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ দিনে প্রায় ৫শ’ পাক-হানাদারকে পরাস্থ করে কোটালীপাড়াকে শত্রুমুক্ত করেছিল হেমায়েত বাহিনী। এদিন সকাল ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়াই প্রথম হানাদার মুক্ত হয়।
এ অঞ্চলে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ছিল খুবই শক্ত অবস্থানে। আর এ এলাকারই সন্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক হেমায়েত উদ্দিন (প্রয়াত) যুদ্ধ শুরু হলে দেশে পালিয়ে আসেন। পাক হানাদার বাহিনীকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে তৎকালীন সময়ে এদেশে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল বেশ কয়েকটি বাহিনী। তারমধ্যে অন্যতম হেমায়েত বাহিনী। ৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন হেমায়েত বাহিনী। কোটালীপড়ায় তিনি একটি ট্রেনিং ক্যাম্পও গড়ে তোলেন। যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়া হতো।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ন হয় হেমায়েত বাহিনী। ৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাঁশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া, জহরের কান্দি, কোটালীপাড়া সদর প্রভৃতি স্থানে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ছোট ছোট যুদ্ধ হয়েছে। আর এসব যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম। এসব যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ও ২৪ জন আহত হন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এরমধ্যে রামশীলের যুদ্ধ অন্যতম। এই যুদ্ধটি এ অঞ্চলে ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধ বলে পরিচিত। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধে মারাত্মকভাবে আহত হন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের কারণে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হেমায়েত উদ্দিনকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
Posted ২:২৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin