নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
ফরিদপুরের পদ্মার পাড়ে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণিল ঘুড়ি উৎসব। ‘চলো হারাই শৈশবে’ এ স্লোগানে শুক্রবার ছুটির দিনে শহরের ধলার মোড়ে এ আয়োজন করা হয়। আকাশে উড়ানো হয় ড্রাগন, হাজারী গোলাপ, পঙ্খিরাজ, চিল, ডিঙি নৌকা, জাতীয় পতাকাসহ নানা রঙের বিভিন্ন আকৃতির অসংখ্য ঘুড়ি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বিকেল ৪টায় এর উদ্বোধন করেন। তবে ঘুড়ি উৎসবে যোগ দিতে তার আগেই বিভিন্নস্থান হতে জনসমাগম হতে থাকে। একপর্যায়ে সেখানে মানুষের ঢল নামে। উৎসবমুখর পরিবেশে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ উৎসব আয়োজন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ঘুড়ি আমাদের হারিয়ে যাওয়া শৈশব, আমাদের বর্তমান যৌবনের স্বপ্ন। ঘুড়ি আকাশে যখন উড়ে বেড়ায় তখন আমরা শুধু তাকিয়ে থাকি না, এর সৌন্দর্য উপভোগ করি।
তিনি আরো বলেন, পদ্মার চর কেন্দ্রিক এই উৎসবকে স্থায়ী রূপ দিতে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি আমাদের হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলা, বৈশাখী মেলাসহ বিনোদনমূলক উৎসব যাতে ফিরিয়ে আনা যায় সে উদ্যোগ নেয়া হবে। এই সৌন্দর্য ফরিদপুরবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
এ সময় ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম, কোতয়ালী থানার ওসি হাসানুজ্জামান হাসান, ডিক্রিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পেপারটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সহযোগিতায় ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় সেখানে ফানুস উড়ানো হয়। উৎসবকে ঘিরে সেখানে ঘুড়ি বিক্রিরও ব্যবস্থা ছিল।
উৎসবে পরিবার নিয়ে এসে ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর এলাকার বাসিন্দা তামান্না আক্তার বলেন, দেশের অন্য কোথাও এ রকম আয়োজন হয় কি-না জানা নেই। আমি এখানে গত তিন বছর যাবৎ আসছি, আমার খুবই ভালো লাগে। প্রতিবছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। এবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি।
ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দেবাশীষ দাস বলেন, শহরের নাগরিক জীবনে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শেকড়ের কথা নতুন প্রজন্ম প্রায় ভুলতেই বসেছে। এখানে এসে যেন শৈশবে হারিয়ে গেছি। ঘুড়ি উড়ানো আমাদের বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ঐতিহ্য। এর আয়োজকেরা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমরা শৈশবে এভাবে ঘুড়ি উড়াতাম।
ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশনের রোকন উদ্দিন বলেন, ঘুড়ি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাখতে প্রতিবছর এই আয়োজন করে থাকি। শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যেতে অনেকে রঙ বেরঙের ঘুড়ি উড়াচ্ছেন। এখানে ফরিদপুরের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন।
Posted ৩:২৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin