হুমায়ুন কবির:: | বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোয় কর ফাঁকির বড় কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিলাসবহুল ভবন। গুলশান-বনানি-তেজগাঁও-ধানমণ্ডিতে বিলাসবহুল ভবন হয়ে উঠেছে আয়কর ফাঁকির বড় ফাঁদ। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, তারকাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিত্তশালীরা তথ্য ও প্রকৃত দাম গোপন করে কোটি কোটি টাকা কর ফাঁকি দিচ্ছেন।
ব্যাংক লেনদেনের সূত্র ধরে এমন করফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। বেশকিছু ভবনের বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্পেস বেচা-কেনার তথ্য বিশ্লেষণ করে এর প্রমাণ পেয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। ফাঁকি হওয়া কর আদায়ে ব্যবস্থাও নিয়েছে সংস্থাটি।
গুলশানে একটি আবাসিক ভবনে জাতীয় ক্রিকেট দলের এক খেলোয়াড় ফ্ল্যাট কিনেছেন ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকায়। কিন্তু এই তথ্য তিনি আয়কর নথিতে দেখাননি। কর ফাঁকি হয়েছে তিন কোটি টাকার বেশি। একই ভবনে এক ডাক্তার ১৩ কোটি টাকায় চার হাজার ৩৭৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনে আয়কর নথিতে দাম দেখিয়েছেন সাড়ে চার কোটি টাকা। তিনি কর ফাঁকি দিয়েছেন, দুই কোটি টাকার বেশি। অন্য একটি ভবনে বেসরকারি কোম্পানির এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নয় হাজার সাত শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ৪৯ কোটি টাকায় কিনে আয়কর নথিতে দেখিয়েছেন মাত্র ১০ কোটি টাকা। কর ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
একজন ব্যারিস্টার ১৩ কোটির টাকার ফ্ল্যাট গোপন করে ফাঁকি দিয়েছেন সোয়া তিন কোটি টাকা। এক ব্যবসায়ী গোপন করেছেন ২৮ কোটি টাকার ফ্ল্যাটের তথ্য।
গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডের একটি ভবনে ৭৩ কোটি টাকায় বাণিজ্যিক স্পেস কিনেছে একটি সিকিউরিটিজ কোম্পানি। কিন্তু কোম্পানির অডিট রিপোর্টে খরচ দেখানো হয়েছে মাত্র ৫৫ লাখ টাকা। এতে কর ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।
আরেকটি কোম্পানি অডিট রিপোর্টে ১৩ কোটি টাকার একটি স্পেস গোপনের মাধ্যমে কর ফাঁকি দিয়েছে সোয়া তিন কোটি টাকা। একটি সাইকেল প্রস্তুতকারক কোম্পানি প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ফ্লোরের তথ্য গোপন করে কর ফাঁকি দিয়েছেন। ব্যাংক লেনদেনের সূত্র ধরে এমন করফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে এনবিআর কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডাইলগের (সিপিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কীভাবে সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন, কেনা-বেচা বাজারমূল্যের মধ্যে রাখা যায়।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, কর ফাঁকি ধরতে বনানী, ধানমন্ডিসহ আরো কিছু অভিজাত এলাকায় চলছে অনুসন্ধান।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন সঠিক পদ্ধতিতে করা হলে এনবিআরের কাছে সব ডকুমেন্টস থাকবে। এতে করে প্রতিদিন যে নতুন নতুন দলিল হচ্ছে এনবিআর তা সহজেই বিশ্লেষণ করতে পারবে।
Posted ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin