নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট
দুই বছর আগে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া জেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙ্গা নদীর ওপরে ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাংনী উপজেলার বেতবাড়ীয়া ও দৌলতপুরের মধুগাড়ি গ্রাম সংলগ্ন মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর প্রায় সাড়ে ৭ কােটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করেছে কফিল অ্যান্ড কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ১০১০০ মিটার চেইনেজে ৭৫ মিটার দীর্ঘ পিএসসি গার্ডার নির্মিত ব্রিজটির কাজ শেষ হলেও এখনো সংযোগ সড়ক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
বেতবাড়ীয়া গ্রামের গাড়ি চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি গাড়ি নিয়ে দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরু নিয়ে বিভিন্ন হাটে যাই। সংযোগ সড়ক না থাকায় অনেক কষ্টে গরু আনতে হয় দৌলতপুর উপজেলা থেকে। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে গরু আনতে হয় স্থানীয় বামন্দী হাটে। ব্রিজটির পাশে রাস্তা হলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হবে।
মধুগাড়ি গ্রামের সবজি বিক্রেতা সুজন দাস বলেন, গ্রামে গ্রামে সবজি কেনার পর সেগুলো মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় বিক্রি করতে যাই। সংযোগ সড়ক না থাকায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে নাটনাপাড়া ও গরুড়া গ্রাম ঘুরে সবজি বিক্রি করতে যেতে হয়। ফলে সবজি বহনকারীদের বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। সংযোগ সড়ক হলে আমাদের আয় আরো বেড়ে যাবে।
স্থানীয় কৃষক নয়ন কুমার বলেন, আমরা প্রায় প্রতিদিন ৫-৬ বার মাঠে আসি এই ব্রিজ দিয়ে। ব্রিজটির সংযোগ সড়ক না থাকাই আমরা ঠিকমত ফসল বহন করতে পারছি না। ফলে শ্রমিকদের বাড়তি টাকা দিয়ে ফসল কেটে ঘরে তুলতে হচ্ছে। ব্রিজটির সংযােগ সড়ক হলে আমাদের অনেক উপকার হবে।
দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি আলাবুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় আমাদের কােনো কাজে আসছে না। ব্রিজটির সংযােগ সড়ক হলে ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষায় অনেক এগিয়ে যাবে এ এলাকার মানুষ।
গাংনীর কাজীপুর ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের সময় সংযােগ সড়কের জন্য এলাকার অনেকেই জমি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের দুই বছর পার হলেও এখন কেউ জমি দিতে না চাওয়ায় সংযোগ সড়ক হচ্ছে না। ব্রিজের সংযোগ সড়ক হলে প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে ২০-৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। সংযোগ সড়ক না থাকায় ভোগান্তি নিয়ে ৫-১০ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে মানুষকে।
ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কফিল অ্যান্ড কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার জান মহাম্মদ মিন্টু বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের সময় অনেকেই সংযোগ সড়কের জন্য জমি দিতে চেয়েছিলেন। ব্রিজ নির্মাণের পর এখন সকলেই জমি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। এ কারণেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাসও পেয়েছি।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন জানান, কাজের শুরুতে জমির মালিকরা রাস্তার জন্য জমি দিতে চেয়েছিলেন। জমির মূল্য বেশি হওয়ায় তারা এখন জমি দিতে রাজি হচ্ছেন না। পিডির অনুমোদন নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব পেশ করেছি। ভূমি অধিগ্রহণ হয়ে গেলেই দ্রুত সড়কের কাজ শুরু করা হবে।
Posted ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin