শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোখে দেখেন না, তবু দিচ্ছেন পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

চোখে দেখেন না, তবু দিচ্ছেন পরীক্ষা

পাশাপাশি বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন দুজন। একজন বললেন আরেকজন লিখছেন। এভাবেই এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ১২ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তাদের হয়ে উত্তর লিখছেন আরো ১২ শিক্ষার্থী। চোখে না দেখলেও শুনে শুনে পড়া মুখস্থ করছেন প্রতিবন্ধকতার কাছে হার না মানা এ অদম্যরা।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ১২ শিক্ষার্থীই এবার কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দৃষ্টিহীন অপু চন্দ্র দাশ ও মো. তানিম হোসেন। তাদের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে কুমিল্লা সরকারি কলেজের ৩৪২ নম্বর কক্ষে। এ দুজনের হয়ে পরীক্ষার উত্তরপত্রে লিখছেন দশম শ্রেণির দুই ছাত্র।

অপু দাশের শ্রুতিলেখক মনির হোসেন। অপু বলেন, আমি বেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করি। দুই বছর ধরে ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। মনির বলেন, অপুর পরীক্ষা ভালো হচ্ছে। আমি প্রশ্ন পড়ে শোনালে গুছিয়ে উত্তর লিখতে বলেন। দুই পরীক্ষা বেশ ভালো হয়েছে।

অপু ও তানিম থাকেন কুমিল্লা নগরীর চর্থা এলাকায় সৈয়দা জাহানারা হায়দার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্রাবাসে। তাদের সঙ্গে আরো ১০ প্রতিবন্ধী রয়েছেন। তারা একইভাবে লেখাপড়া করছেন।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলা সদরের পূর্বপাড়ায় অপুর বাড়ি হলেও নিম্নবিত্ত হওয়ায় ছাত্রাবাসে দিয়েছে পরিবার। আর তানিমের বাড়ি সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন্দ এলাকায়।

আর্থিক টানাপোড়েন থাকলেও নিজেদের অদম্য শক্তিতে লেখাপড়া করছেন অপু-তামিম। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এখন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ারও ইচ্ছা রয়েছে এ দুজনের।

জীবনের লক্ষ্য বলতে গিয়ে তানিম বলেন, আমার বাবা মাছ ধরার জাল বানান। অনেক কষ্টে আমাদের চার ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করেন। আমি দ্বিতীয় সন্তান। আমি একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাই। যেন ছাত্রদের স্বপ্ন দেখাতে পারি।

ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অপু। তিনি বলেন, আমার একজন শিক্ষক ছিলেন জন্মান্ধ। তিনি লেখাপড়া করে সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হয়েছেন। পরিবারের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এনেছেন। আমিও তার মতো হতে চাই।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, কুমিল্লা বোর্ডে এবার ১২ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। শ্রুতিলেখকের জন্য পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিতে হয়। এছাড়া পরীক্ষার্থীর চেয়ে জুনিয়র হতে হয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]