শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুর মাইন বিস্ফোরণ মহারাজা দিবস শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

দিনাজপুর মাইন বিস্ফোরণ মহারাজা দিবস শুক্রবার

দিনাজপুর মহারাজা মাইন বিস্ফোরণ দিবস শুক্রবার (৬ জানুয়ারি)। ১৯৭২ সালের এই দিনে দিনাজপুরের মহারাজা স্কুল প্রাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধা ট্রানজিট ক্যাম্পে এক আকস্মিক মাইন বিস্ফোরণে একসঙ্গে শহীদ হন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ছিনিয়ে আনা পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন অনেকে।

দিবসটি পালন উপলক্ষে স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

সকাল ১০টায় প্রথমে সদর উপজেলার চেহেলগাজী মাজারে শহীদদের সমাধিস্থলে এবং পরে শহরের মহারাজা গিরিজানাথ স্কুলে স্থাপিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। এ সময় শহীদদের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং শপথবাক্য পাঠ ছাড়াও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতাযুদ্ধ-পরবর্তী দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ির মহারাজা স্কুল প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয় মুক্তিযোদ্ধা ট্রানজিট ক্যাম্প। এখানে অবস্থান নিয়ে প্রায় আটশ মুক্তিযোদ্ধা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে পাক সেনাদের পুঁতে রাখা মাইন অপসারণ করে জড় করছিলেন এই ক্যাম্পে।

১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি ঠিক মাগরিবের নামাজের পর দুটি ট্রাক থেকে মাইন নামানোর সময় হঠাৎ এক মুক্তিযোদ্ধার হাত থেকে একটি মাইন ফসকে পড়ে যায় জড়ো করা মাইনের ওপর। সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ ঘটে জড় করা হাজারো মাইনের। কেঁপে ওঠে গোটা দিনাজপুর। প্রাণ হারান সেখানে অবস্থান নেয়া পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। আহত হন শত শত মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের এসব ছিন্ন ভিন্ন অংশ জড়ো করে সমাহিত করা হয় সদর উপজেলার চেহেলগাজী মাজারে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৬ জানুয়ারি স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক মো. সফিকুল হক ছুটু বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বরের পর দিনাজপুর শহরে মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত ট্রানজিট ক্যাম্পে ভারতের পতিরাম, হামজাপুর, বাঙ্গালবাড়ি, তরঙ্গপুর, বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, ফুলবাড়ি, হাকিমপুর সদর, ঠাকুরগাঁও, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল ও হরিপুর এলাকার ৬ ও ৭ নম্বর সেক্টরের প্রায় দুই হাজার মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাস। সদ্য স্বাধীন দেশের মানুষ আনন্দে আত্মহারা। ১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি দুপুর গড়িয়ে বিকেলের সূর্যটা পশ্চিম প্রান্তে হেলে নিস্তেজ প্রায়। ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে ৫টা। এমন সময় নবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট থেকে উদ্ধার করা দুই ট্রাক অস্ত্র মহারাজা স্কুল ক্যাম্পে নিয়ে আসেন মুক্তিযোদ্ধারা।

একটি ট্রাক খালাসের পর অপর ট্রাকটি খালাসের একপর্যায়ে হাতবদলের সময় একটি মাইন মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় বাংকারে স্তূপীকৃত বিপুল মাইন, বোমা, বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে বিদ্যালয়ের কক্ষ ও মসজিদে নামাজ আদায়কারী পাঁচ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বাংকার সংলগ্ন এলাকা ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর পুকুরে পরিণত হয়, যা আজও কালের সাক্ষী হয়ে আছে। নিহতদের অনেকের মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সেদিন চিহ্নিত করা যায়নি অনেক মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]