নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
এলসি জটিলতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ রেখে অলস অপেক্ষায় বেশকটি জাহাজ। অথচ এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল-চিনি-ছোলার মতো সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের বুকিং রেট সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
প্রয়োজনীয় ডলারের পাশাপাশি এলসি খোলার জটিলতা নিরসন না হলে আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়ে রেকর্ড সৃষ্টিকারী ২০০ মিটার দীর্ঘ এমভি কমন এটলাস নামের জাহাজটিতে এখনও রয়ে গেছে প্রায় ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চিনি। ডলার সংকটে এলসির অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় এটির মতো আরও অন্তত তিনটি জাহাজ এবং অয়েল ট্যাংকার খালাস বন্ধ রেখে বন্দরে অপেক্ষা করছে। এসব জাহাজে আনা হয়েছে রমজানের জন্য চিনি এবং ভোজ্যতেল।
বন্দরে এ ধরনের জাহাজ অপেক্ষায় থাকায় আসন্ন রমজানে পণ্য সংকটের পাশাপাশি দাম লাগামহীন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি সপ্তাহে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিন ১ হাজার ৩৫০ মার্কিন ডলার এবং পাম অয়েল ৯৯০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ গত মাসে সয়াবিন দেড় হাজার মার্কিন ডলার এবং পাম অয়েল ১ হাজার ৫০ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স সবুজ কমার্শিয়ালের মালিক শাহেদ উল আলম বলেন, এলসি পাস করাতে না পারার কারণে মালগুলো খালাস করতে পারছি না। তার ফলে জাহাজের লোকসান আমাদের দিতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আর এন এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, এলসি করার জন্য ডলারে সুবিধা যেগুলো দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতায় আমরা মিল পাচ্ছি না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে রমজান মাসে ক্রাইসিস শুরু হয়ে যাবে।
চিনির দামও আন্তর্জাতিক বাজারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। সেইসঙ্গে ছোলার বুকিং রেট প্রতি মেট্রিক টনে কমেছে অন্তত ৪০ মার্কিন ডলার।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আলতাফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক আবদুল গাফ্ফার বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে চিনির দাম কিছুটা কম। তারপরও রমজানে যদি ডলারের দাম না কমে এবং ব্যাংকগুলো যদি এলসি না করে তাহলে রমজানে কিন্তু চিনির দাম অনেক বাড়তি থাকবে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স তৈয়বিয়া বাণিজ্যালয়ের মালিক সোলায়মান বাদশা জানান, ছোলা আন্তর্জাতিক বাজারে ১ মাস আগে ৬২০ ডলার ছিল সেটা বর্তমানে ৬০০-৬১০ ডলারে নেমে এসেছে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে এলসি করতে পারছি না।
এরইমধ্যে বাংলাদেশে রমজানের জন্য আমদানি করা ভোগ্যপণ্য খালাস শুরু হয়েছে। তবে এখনই জটিলতা নিরসন করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হক লিটন বলেন, রমজানের ব্যাপারে সরকারের উচিত ইচ্ছামতো পণ্য আমদানির সুযোগ দেয়া, ডলার সংকট বলেন আর যাই বলেন না কেন একটা সংকট তৈরি হবে।
রমজান মাসে বাংলাদেশে আড়াই থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন চিনি, সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন ছোলার চাহিদা রয়েছে, যার পুরোটাই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
Posted ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin