শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় দৃষ্টিনন্দন ফুলবাগান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় দৃষ্টিনন্দন ফুলবাগান

মাস ছয়েক আগেও রাজশাহী রেলভবনের বেশকিছু জায়গা ছিল পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ। বিশেষ করে রেল ভবনের জিএম ভবন, ইঞ্জিন চত্বর ও শহীদ মিনার। এসব পরিত্যক্ত জায়গায় প্রায় অর্ধশত প্রজাতির ফুলগাছ লাগিয়ে বাগান তৈরি করেন রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার। এখন ফুল বাগানে ফুটেছে হরেক রকমের দৃষ্টিনন্দন ফুল। এতে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সবারই প্রসংশায় ভাসছেন তিনি।

বাগানে ফুলের চারা, পরিচর্যা ও সার্বিক দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন আরএনবি সদস্য দত্ত। তিনি বলেন, দৃষ্টিনন্দন এ বাগানে রয়েছে ৫০ রকমের ফুল। এরমধ্যে পিটুনিয়া মিক্সড, জিনিয়া মিক্সড, নয়নতারা, বাগানবিলাস, এলামন্ডা, মাধবীলতা, ড্রপজিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, হেঁচপাত (ডোরিন্ডা), ভারবীনা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, কেলেনডুলা, ডান্থাস, সিলভিয়া, সাফারি গাঁদা, সনোবল, অ্যানটিনিয়াম, বেবিডল ডায়নথাস, ভারবিনা কোয়াট্স, গাজীনিয়া, কেলেঞ্চ, এস্টার, পোয়েন সেটিয়া (সুলতানা), ডালিয়া, লাল রঙ্গন, রেইন লিলি, নন্দিনী, বিউটিকুইন, ঘাঁসফুল, কেক্টাস, ইনকাগাঁদা, সেলোশিয়া, মিনি টগর, হলুদ রঙ্গন, গোলাপী রঙ্গন, টর্নিয়াসহ আরো নানা ধরনের ফুলগাছ। জিএম ভবনেই লাগানো হয়েছে ৪ হাজার ফুলগাছ। এছাড়া রাজশাহী রেলস্টেশনে পার্কিং এরিয়ার ঝাউগাছ তুলে লাগানো হয়েছে ডালিয়া, গাঁদা, ডায়ানথাস, পিটুনিয়া, জিনিয়া ও গ্লাডিওলাস প্রজাতির ১৭০০টি গাছ।

সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদকের চোখে পড়ে একটি লেখা- ‘ফুল আপনার মনের ক্ষুধা মেটায়, একে বেঁচে থাকতে দিন।’ আবার গাছের সঙ্গে ফুলের ছবি সংবলিত একটি সাইনবোর্ডে কবিতার ছন্দে লেখা রয়েছে- ‘এই বাগানে ফুল তোলা মানা, সবাই যেন শোনে কথা; বাতাস শুধু শোনে না, সে তো পড়তে জানে না।’ তবে কবিতার শেষে লাল রংয়ে ব্রাকেটের মধ্যে লেখা রয়েছে- আপনি কিন্তু পড়তে জানেন। মূলত এগুলো বাগানের ফুল না ছেড়ার সতর্কবার্তা।

বাগানের মালি মাসুদ জানান, বাগান পরিচর্যার জন্য যা যা করা দরকার জিএম স্যার সব করেছেন। বাগানে ঠিকভাবে পানি দেওয়ার জন্য ঠিক করে দিয়েছেন লাইন। গাছের পরিচর্যার জন্য জৈবসার, হাড়ের গুড়া, নিমপাতার গুড়া, খৈল, সার, কীটনাশক ও গাছ বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন কিনেছেন। এগুলো ৫-৭ দিন পর পর দেওয়া হয়। এছাড়া কোথাও কোনো গাছ মারা গেলে তার বদলে পুনরায় আরেকটি গাছ লাগানো হয়।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মেহেদী হাসান। জিএম ভবনের দোতলায় তার দফতর। জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসে প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় মনোরম ফুলের বাগান দেখে মনটা জুড়িয়ে যায়। ক্লান্তি ও কর্মব্যস্ত সময়ের মাঝে একটু বাইরে বের হলেই বাগানে সামনে এসে তাকিয়ে থাকতেই ভালো লাগে।

জিএম অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ফুল তো মনের ক্ষুধা মেটায়। পরিবেশ ও সমাজের সৌন্দর্য। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর জায়গাটি অগোছালো ও পরিত্যক্ত দেখে খুব খারাপ লাগত। প্রতিদিন অনেক মানুষ এই ভবন দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। তাই ভাবলাম জায়গাটির উপযুক্ত ব্যবহার করা দরকার। যেই ভাবনা, সেই কাজ। উদ্যোগ নিয়ে কয়েকজনকে সঙ্গে করে খুব অল্প খরচে বাগানটি করে ফেললাম। এখন বাগানে সবাই এসে ছবি তোলে, বাগানে সৌন্দর্য উপভোগ করে এসব দেখে আমারও বেশ ভালোই লাগে।

শুধু আমার জিএম ভবনেই ফুলগাছ লাগানো হয়েছে তা নয়, স্টেশন চত্বর ও জিএম ভবনের আশপাশের জরাজীর্ণ জায়গাগুলোতেও আমি পরিষ্কার করিয়েছি। লাগিয়েছি ফুল ও ফলের গাছ। পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর পাকশীতে ডিআরএম থাকাকালেও আমি হাজার খানেক ফুল ও ফলগাছ দিয়ে মনোরম বাগান করে এসেছি। যা আজও সেখানে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]