সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই বিচারকের পর ওএসডি হলেন প্রধান শিক্ষিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

সেই বিচারকের পর ওএসডি হলেন প্রধান শিক্ষিকা

এক শিক্ষার্থীর মাকে নারী বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানোর আলোচিত সেই ঘটনায় বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনকে বদলী করা হয়েছে। তাকে ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে।

রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি সার্কুলার জারি করে এ আদেশ দেওয়া হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো। আজ অপরাহ্ন থেকেই ওই কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক বিমুক্ত বলে গণ্য হবেন।

এর আগে, গত ২৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি সার্কুলার জারি করে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়।

জানা গেছে, গত ২১ মার্চ সকালে ওই স্কুলে অভিভাবক সমাবেশে এক অভিভাবককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। এরপর ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী বিচারকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুলের সামনে সড়ক অবরোধ করেন। তারা ওইদিন রাত ৮টা পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করেন। পরে সেখানে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম পৌঁছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনার একপর্যায়ে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে সেদিন রাত সোয়া ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।

শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, ওই বিচারক এসে ক্ষমা চাওয়ার পর তারা আন্দোলন স্থগিত করবেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট দিন পরপর ক্লাসরুম ঝাঁড়ু দেয়। কিন্তু বিচারকের মেয়ে এ নিয়ম মানে না। অন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম ঝাঁড়ু দিলেও সে তা করে না। অন্য ছাত্রীদের গরিবের মেয়ে বলে অপমানও করে সে। বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই বাগবিতণ্ডা হতো তার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০ মার্চ রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয় বিচারকের মেয়ে। তার ওই পোস্ট দেখে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী ক্ষিপ্ত হয়। তাদের মধ্যে একজন ওই পোস্টের স্ক্রিনশট দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ২১ মার্চ সকালে স্কুলের অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত হন বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন। সেখানে এসে স্কুলের এক কক্ষে তিন শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবককে ডেকে নেন। এরপরে সাইবার ক্রাইম অপরাধের অভিযোগে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেন ওই বিচারক। বিচারকের মেয়েও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুধু ওই বিচারকের ওপরই নয়, প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও ছিল।

তারা অভিযোগ করে, বিচারকের মেয়ে ক্লাসরুম ঝাঁড়ু না দিলেও প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রাবেয়া খাতুন তাকে কিছুই বলেন না। সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিচারকের মেয়ের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরণ করেন তিনি। এমনকি মা ধরে মাফ চাওয়ার ঘটনাতেও প্রধান শিক্ষিকা সেই বিচারকের মেয়ের পক্ষ নেন বলেও অভিযোগ তোলে শিক্ষার্থীরা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]