নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবরার ফাহাদ নিজেই নিজের কলেজ ক্যাম্পাসে দিয়েছেন ফলের জুসের দোকান। লোকলজ্জার ভয়কে পদদলিত করে পড়ালেখার পাশাপাশি নিজের দোকান থেকে অর্জিত আয় দিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ যুগিয়ে পরিবারকে টাকা পাঠান প্রতি মাসে।
ফাহাদ শুরুতে একাই কাজ করতেন তার ফলের জুসের দোকানে। তবে বর্তমানে সহযোগী হিসেবে রেখেছেন আরেক শিক্ষার্থীকে। মোহাম্মদ আবরার ফাহাদ সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ফাহাদের এই ভিন্নধর্মী চিন্তা ভাবণার, তার উদ্যোক্তা হওয়ার প্রশংসা করছেন সবাই। তার ক্যাম্পাসের সহপাঠী, বন্ধু, সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, তার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বেকার বসে থেকে ডিপ্রেশনে চলে যায়। অনেক সময় তারা মাদক গ্রহণ করে, বিভিন্ন অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে ফাহাদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠা খুবই প্রশংসার।
ফাহাদ বলেন, পরিবারকে একটু সচ্ছল রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি আগে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। অনেক দিন চাকরি করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম আর অন্যের অধীনে চাকরি নয়, এবার নিজে কিছু করতে হবে। সেই চিন্তা থেকে নিজের কলেজ ক্যাম্পাসের শাকিল চত্বরে ফলের জুসের দোকান দিয়েছিলাম। শুরুতে কাজ অনেক চ্যালেঞ্জিং হলেও দিন দিন ক্রেতাদের নিকট আমার তৈরি ফলের জুসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ আট মাসের এই পথচলাতে সবার থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি।
ফাহাদের জুসবারে পাওয়া যায় পেঁপে, তরমুজ, কমলা, মালটাসহ সব ধরণের ফলের জুস। মোট ৩০ পদের জুস পাওয়া যায় তার দোকানে। তার এই উদ্যোগে সাহস যুগিয়ে পাশে থেকেছেন নিজ কলেজ ক্যাম্পাসের সহপাঠীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, সবসময় ভীর লেগেই থাকে তার দোকানে। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রত্যেকটা আইটেমে ১০ টাকা করে কম রাখেন ফাহাদ।
তিনি বলেন, আমার দোকান নিয়ে কে কী ভাবছে, তা আমার জানার প্রয়োজন নেই। আমি একটি জুসের দোকান করে প্রতিদিন আয় করছি। এটা আমার কাছে অনেক পাওয়া। কেউ যদি আমার কাজকে হেয়ভাবে দেখে এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত চিন্তা। আমি কাজ করে খাচ্ছি, চুরি তো করছি না। আমার কাছে এটা ভালো লাগা, ভালোবাসার জায়গা। তবে আমাদের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীদের উচিৎ পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু একটা করা। ভবিষ্যতে আমার একটি রেস্টুরেন্ট দেওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে।
ফাহাদ বলেন, বাবা-মার ওপর চাপ না বাড়িয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর উচিৎ কিছু না কিছু শুরু করা। কেউ যদি ইচ্ছা করে আমি নিজে থেকে কিছু করব, তাহলে অবশ্যই সম্ভব। ‘আমিও কিছু করতে পারব’ এমন বিশ্বাস রেখে তরুণদের এগিয়ে যেতে হবে।
Posted ৮:২২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin