নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
বিভিন্ন দেশেই এখন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু জার্মানি একমাত্র দেশ, যে পরমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
আগামী শনিবার জার্মানির শেষ তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরো পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে।
পরমাণু বিদ্যুত নিয়ে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যেও দ্বন্দ্ব পুরোপুরি কাটেনি। পরিবেশবাদী সবুজ দল গত বছরই শেষ তিনটি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও উদারপন্থি এফডিপি দল জ্বালানি সংকট এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেগুলো চালু রাখার দাবি জানিয়ে ছিল।
অবশেষে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এফডিপি সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করলেও শলৎস নিজের সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছেন। এমনকি কেন্দ্রগুলো অকেজো করার বদলে রিজার্ভ হিসেবে রেখে দেবার প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। যদিও অকেজো করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবার পর জার্মানিতে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরকারের তৎপরতায় দ্রুত বিকল্প উৎসের ব্যবস্থা হওয়ায় ব্ল্যাকআউট বা অন্য কোনো অঘটন ঘটেনি। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কাও মোটামুটি সামলে নিয়েছে দেশটি।
ফলে পরমাণু বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করার আর কোনো কারণ দেখছেন না বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ। তাই জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এই পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শনিবার বিদ্যুতের গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পরেও তিনটি পরমাণু কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হবে না। অনেক দিন ধরে সেই কাজের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিরাপদে সেই প্রক্রিয়া চালাতে ধীরে ধীরে চুল্লিগুলো ঠাণ্ডা করতে হবে। পানি ভরা চুল্লির মধ্য থেকে জ্বালানির উপাদান বের করে নিতে হবে। কেন্দ্র ভেঙে ফেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হতে বেশ কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশকও সময় লাগতে পারে।
জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জার্মানির সরকার ২০১১ সালে পরমাণু বিদ্যুৎ পুরোপুরি বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ২০০২ সালেও তৎকালীন সরকার নীতিগতভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর নতুন করে কোনো কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সূত্র: ডয়চেভেলে
Posted ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin