মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে প্রেমিকার গর্ভপাতের পর উধাও হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে প্রেমিকার গর্ভপাতের পর উধাও হৃদয়

দুই বছর ধরে হৃদয় বিশ্বাসের সঙ্গে কলেজছাত্রী প্রেম। সেই প্রেমের জেরে ওই ছাত্রীকে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন হৃদয়। এ সময় ‘বিশেষ মুহূর্তের’ ছবি মোবাইলে ধারণ করে রাখেন প্রেমিক হৃদয়। এরপর সেই ছবি দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন তিনি। একপর্যায়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তরুণী। পরে বিয়ের প্রলোভনে গর্ভপাত করানোর পর লাপাত্তা প্রেমিক।

ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায়।গত ১১ এপ্রিল রাতে এ ঘটনায় প্রেমিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই প্রেমিকা। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার সদর ইউপির বাসিন্দা গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের ছেলে প্রেমিক হৃদয় বিশ্বাস, হৃদয়ের মা করবী দস্তীদার বিশ্বাস, তার বোন ডা. সুরঞ্জনা বিশ্বাস ও কাকা বিমল বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চরভদ্রাসন থানার ওসি মো. সেলিম রেজা।

জানা যায়, দুই বছর ধরে হৃদয় বিশ্বাসের সঙ্গে কলেজছাত্রী প্রেম। সেই প্রেমের জেরে ওই ছাত্রীকে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন হৃদয়। এ সময় ‘বিশেষ মুহূর্তের’ ছবি মোবাইলে ধারণ করে রাখেন প্রেমিক হৃদয়। এরপর সেই ছবি দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন তিনি। একপর্যায়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তরুণী।

এদিকে বিষয়টি অভিযুক্ত হৃদয়ের পরিবারকে জানান ওই ছাত্রী। পরে বিয়ের প্রলোভনে গর্ভপাত করান হৃদয়ের মা করবী দস্তীদার বিশ্বাস ও তার বোন ডা. সুরঞ্জনা বিশ্বাস। কিন্তু এরপরই পালিয়ে যান হৃদয়। পরিবারের সদস্যরাও সব কিছু অস্বীকার করেন। উপায়ন্তর না পেয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা কবির ত্রপার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। কিন্তু ইউএনও এক সপ্তাহের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দেবে বলে গত ৯ এপ্রিল বদলি হয়ে যান তিনি। এরপর গত ১১ এপ্রিল চরভদ্রাসন থানায় গিয়ে ভুক্তভোগী ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ছাত্রী।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে হৃদয়। প্রেমের অভিনয় করে আমাকে ব্ল্যাকমেল করে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি ওর থেকে দূরে সরে আসতে চাই। কিন্তু হৃদয় তখন আমার নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিয়ে দেবে বলে ভয় দেখিয়ে পুনরায় শারীরিক করে। আমি একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। তখন হৃদয়, ওর মা, বাবা ও বোন আমাকে বলে পেটে বাচ্চা থাকলে কীভাবে বিয়ে হবে। তুমি গর্ভপাত করে ফেলো, তারপর বিয়ের ব্যবস্থা করছি।

তিনি আরো বলেন, তাদের ছলনায় পড়ে আমি রাজি হই। হৃদয়ের মা গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের বাড়িতে এসে বিয়ের কথা বলে আমাকে চারটি ট্যাবলেট দিয়ে খেতে বলে। ওষুধ খাওয়ার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এই খবর হৃদয়ের মা আমাকে পাশের সদরপুর উপজেলার পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়।

সেখানে হৃদয়ের বোন ডা. সুরঞ্জনার চেম্বার আছে। তিনি আমার ভ্রণ নষ্ট করার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। এরপর সেখান থেকে আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিছুদিন বাড়িতে থাকার পর আমি সুস্থ হই। কিন্তু তারা আর কোনো খবর নেয়নি।যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। কোনো উপায় না পেয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা কবির ত্রপার কাছে অভিযোগ দেই। কিন্তু তিনি গত ৯ এপ্রিল বদলি হয়ে যান। পরে মঙ্গলবার চরভদ্রাসন থানায় মামলা করেছি।

হৃদয় বিশ্বাসের কাকা বিমল বিশ্বাস জানান, হৃদয় এখন বাড়িতে নেই। জমিজমা নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে আমাদের বিরোধ আছে। সেই বিরোধী পক্ষের লোকজনই ওই মেয়েটিকে দিয়ে সমাজে আমাদের হেয় করতে এসব গুজব ছড়াচ্ছে।

চরভদ্রাসন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ জানান, ওই তরুণী যেদিন ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেয়, সেদিন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও চেষ্টা করেছিলেন মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু ছেলের পরিবার ঘোরানোর কারণে তা সম্ভব হয়নি।

চরভদ্রাসন থানার ওসি মো. সেলিম রেজা জানান, মঙ্গলবার প্রেমিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন ওই কলেজছাত্রী।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:২১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]