নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
চলচ্চিত্রের রঙিন পর্দায় উত্তাল সমুদ্র, জলের নিচে অ্যাকশন দেখলে মনে বেশ রোমাঞ্চ জাগে। কিন্তু এমন দৃশ্যের শুটিং মোটেই সহজ নয়। বেলজিয়ামে এক অভিনব স্টুডিও সেই কাজ অনেক সহজ করে তুলছে।
তবে দেখতে সহজ মনে হলেও জলের নিচে ভিডিতে কাজ করা বেশ কঠিন। এর জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের। বেলজিয়ামের অনেক মানুষ পানির ওপর বা নিচে ভিডিও ক্যামেরা চালাতে ওস্তাদ। এমনকি সেখানেই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ‘ওয়াটার স্টুডিও’। দশ মিটার গভীর সেই পুলের মেঝে ওঠানামা করা যায়, এছাড়া ব্যবস্থা রয়েছে স্পেশাল এফেক্টেরও!
উপযুক্ত আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে বিরক্ত হয়ে এক ক্যামেরাম্যান ও ডুবুরি সৃষ্টি করেছেন এমন সমাধানসূত্র। স্টুডিওর মালিক ভিম মিশিয়েল্স বলেন, ‘কখনও একটি মাত্র এফেক্টের জন্য দিনের পর দিন পানির মধ্যে অপেক্ষা করতে হয়েছে। সঙ্গে আরও ৫০ জনকেও অপেক্ষা করতে হয়েছে। তখন মনে হল, অনেক হয়েছে আর নয়…নিশ্চয় আরও ভালো উপায় রয়েছে।’ সেই চিন্তা থেকেই বেলজিয়ামের ছোট শহর ফিলফোর্ডে শহরে ‘লাইটস স্টুডিও’ সৃষ্টি হল। বাইরে থেকে অবশ্য কিছু বোঝার উপায় নেই।
স্টুডিওর পুলটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তিতে ভরা। ঝড় সৃষ্টি করা যায়। কয়েক মিটার উঁচু ঢেউ, মুষলধারে বৃষ্টিও কোনও সমস্যা নয়। এতে স্টান্টম্যানরা যেকোনো কেরামতি দেখিয়ে হয়ে যান শ্রদ্ধার পাত্র। স্টান্টম্যান হিসেবে জেপি ডে কাম মনে করিয়ে দেন, ‘এই ঢেউ কিন্তু মোটেই সহজ নয়। মনে হতে পারে, উপরে মাথা তুলে নিঃশ্বাস নেওয়া যায়। কিন্তু তখনই অন্য ঢেউ আছড়ে পড়ে। নাকে পানি ঢুকে যায়। শান্ত থাকতে হয়, মনে আতঙ্ক এলে চলবে না৷ ঝোড়ো বাতাস, বিকট শব্দ, উঁচু ঢেউয়ের পাশাপাশি বিশাল জলকামান থেকেও জলের ধাক্কা আসে৷ সেই অবস্থায় সাঁতার কাটা আরও কঠিন৷’
স্টান্টম্যান হিসেবে জেপি অত্যন্ত শক্তপোক্ত মানুষ। ফলে স্টুডিওর পরিবেশে তাঁকে কতটা চাপ সামলাতে হয়, তা কল্পনা করা কঠিন কিছু নয়! নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় ও অনেক কর্মীর সহায়তায় এফেক্ট যথেষ্ট নিরাপদ করার ব্যবস্থা থাকলেও অলিম্পিকের মাপের পুলে ৬০ লক্ষ লিটার জল সামলানো বেশ কঠিন কাজ।
সৌর প্যানেল ও অন্য পরিবেশবান্ধব উপায়ে পানির তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা হয়। দীর্ঘ শুটিংয়ের জন্য সেই তাপমাত্রা মনোরম হলেও অন্য সমস্যা রয়েছে। ডুবুরি ও অভিনেতা ক্রিস্টফ ক্যোনেন বলেন, ‘আমরা অভিনেতাদের এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করি। উপায় থাকলে প্রোডাকশনের আগেই তা শুরু হয়। তাদের নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল শেখাই, শান্ত থাকার উপায় বলি এবং জলের নিচে স্কুবা ডাইভিংয়ের সময়ে কীভাবে মুখ দিয়ে বাতাস নেওয়া যায়, তাও সেখাই। অভিনেতাদের ভালো করে প্রস্তুত করলে অনেক সময় বাঁচে। কারণ এমন পরিবেশে তাদের জন্য এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কঠিন৷’ এছাড়া এই স্টু়ডিওতে অনেক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে। কলাকুশলীরা কোথায় সেই সব দৃশ্যের শুটিং করেছেন, দর্শকদের সেই ধারণা নেই৷
Posted ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin