শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ছাড়াল ৮ বিলিয়ন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ছাড়াল ৮ বিলিয়ন ডলার

চলমান ডলার সংকটের এ সময়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর প্রভাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমে গত মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের ৯ মাসে ১ হাজার ৪৬১ কোটি ডলারে নেমেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ২ হাজার ৫০৩ কোটি ডলার ছিল। চলতি হিসাবের ঘাটতিও অনেক কমেছে। তবে নতুন ঋণ কমে যাওয়া এবং আগের ঋণ পরিশোধের চাপ বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিক লেনেদেন ভারসাম্যে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এ ঘাটতি ৮০০ কোটি বা আট বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ের ব্যালান্স অব পেমেন্ট বা লেনদেন ভারসাম্যের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি বৃদ্ধি মানে বিভিন্ন উৎসে দেশে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, পরিশোধ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। গত অর্থবছরে বিক্রি করে আরও ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। গত সোমবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ২৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে। ২০১৬ সালের ২৭ জুনের পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামার ঘটনা এটাই ছিল প্রথম। অবশ্য বিশ্বব্যাংক থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে পাওয়া ঋণের ৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার গতকাল রিজার্ভে যোগ হয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে উঠেছে। গতকাল দিনের শুরুতে রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার।

ডলার সংকটের কারণে গত বছরের জুলাই থেকে আমদানি কমাতে বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। অনেক ধরনের পণ্যের এলসি খুলতে ৭৫ থেকে শতভাগ পর্যন্ত নগদ মার্জিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মার্জিনের টাকা কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ করা যাবে না। এসব কড়াকড়ির পাশাপাশি বড় এলসি খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে তথ্য নিয়ে যাচাই করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব উদ্যোগে আমদানি কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার। আগের  অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ কম। তবে রপ্তানি ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৯৩৩ কোটি ডলার হয়েছে। অন্যদিকে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি। এতে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে ৩৬৪ কোটি ডলারে নেমেছে। আগের বছরের একই সময়ে যেখানে ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৪৩৫ কোটি ডলার।

তবে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া বিদেশি ঋণ যে হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে, নতুনভাবে আসছে তার চেয়ে কম। যে কারণে আর্থিক হিসাবে আগের বছরের ১ হাজার ১৯৩ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত থেকে এখন ২২২ কোটি ডলারের ঘাটতি হয়েছে। নিট বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ১৮ শতাংশ কমে ১৩৪ কোটি ডলারের নেমেছে। সব মিলিয়ে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি হয়েছে ৮১৭ কোটি ডলার। আগের বছরে যা ছিল ৩১০ কোটি ডলার।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায় ২০২১ সালের আগস্টে। পরে বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে চাপে পড়ে রিজার্ভ। গত বছরের ৩০ এপ্রিল ছিল ৪৪ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে গত ডিসেম্বর শেষে তা ৩৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নামে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]