এইচ,এম শহিদুল ইসলাম, পেকুয়া ; | শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
কক্সবাজারের পেকুয়ায় জায়গাজমি নিয়ে পুত্রবধূর সাথে তিন শাশুড়ীসহ ওয়ারিশদের মধ্যে এ বিরোধ দেখা দিয়েছে। এনিয়ে উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গ্রাম আদালত ও থানা পুলিশের কাছে বিচার কার্যক্রম চলছে।
জানা যায়,পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম বাইম্যাখালীর বাসিন্দা ও পেকুয়া বাজারের প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী প্রকাশ লালু সওদাগরের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া দোকানপাট, জায়গাজমির মালিক হন তার তিন স্ত্রী ও ছেলে মেয়েরা। কিন্ত ২০২১ সালে ১৭ জুলাই তার প্রথম পুত্র মাহামুদুল করিম এক স্ত্রী ১ পুত্র ৩ কন্যা রেখে মারা যান। মাহামুদুল করিম মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার শ্বশুর লালু সওদাগরের অন্যান্য ওয়ারিশগণ কে জায়গাজমি থেকে বঞ্চিত করে লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক দখল করে স্থাপনা নিমার্ণ করে যাচ্ছেন। এমনকি রোজিনা আক্তার তার বসতবাড়ীতে লালু সওদাগরের ক্রয়কৃত জায়গা অন্য ওয়ারিশ কে ভাগ না দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে বহুতলা পাকা স্থাপনা নিমার্ণ করছেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সূত্রে আরো জানান, রোজিনা আক্তারের বসতবাড়ির পাশে একই এলাকার মৃত ছিদ্দিক আহমেদের পুত্র আজম উদ্দিনের ৮ শতক জায়গা ছিল। অন্যদিকে আজম উদ্দিনের বাড়ীর পাশে লালু সওদাগরের জায়গা ছিল। উভয়ের মধ্যে উক্ত জায়গা সামাজিক ভাবে মৌখিক এওয়াজ হয়। কিন্তু আজম উদ্দিনকে দেওয়া লালু সওদাগরের জায়গার উপর আজম উদ্দিন বসতবাড়ী করে পেলে। কিন্ত অপর দিকে লালু সওদাগরকে দেওয়া আজম উদ্দিনের জায়গা লালু সওদাগরের ওয়ারিশদের মধ্যে যথাযথ বন্টন না করে রোজিনা আক্তার তার শ্বশুর হতে স্বামীর পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত দাবী করে বহুতল ভবন নিমার্ণ কাজ শুরু করেছে।
অপরদিকে লালু সওদাগরের অন্যান্য ওয়ারিশগণ তাদের পৈত্রিক জায়গার উপর দখলে থাকা আজম উদ্দিনকে দখল ছেড়ে দিতে বললে আজম উদ্দিন ও তার জায়গা ছেড়ে দিতে বলে মৃত মাহামুদুল করিমের স্ত্রী রোজিনা আক্তার কে। এতে কোন সুরাহ না করে জোরপূর্বক স্থাপনার কাজ চালিয়ে গেলে আজম উদ্দিন পেকুয়া সদর ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে বিচার দায়ের করে। চেয়ারম্যান বিষয়টি আমলে নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সাজ্জাদ ও গ্রাম আদালতের গ্রামপুলিশ পাঠিয়ে রোজিনা আক্তার কে কাজ বন্ধ রাখার নিদের্শ দেন। এ নিদের্শ উপেক্ষা করে কাজ চলমান রাখায় আজম উদ্দিন পেকুয়া থানার আশ্রয় নেন। পেকুয়া থানার পুলিশ গিয়ে রোজিনা আক্তারকে কাজ না করতে নিদের্শ দেন। তাও অমান্য করে কাজ চলমান রাখার ফলে ভুক্তভোগী আজম উদ্দিন নিরুপায় হয়ে কক্সবাজার জেলা যুগ্ম জজ আদালতে রোজিনাসহ অন্যান্য ওয়ারিশকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত উক্ত জায়গায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখে ১৪৪ ধারা জারি করে। এতে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় জায়গায় কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নিদের্শ দেন।
সূত্রে আরো জানান, রোজিনা আক্তার পেকুয়া বাজারে তার শ্বশুরের কিনা জায়গাও অন্য ওয়ারিশদেরকে বঞ্চিত করে জোরপূর্বক দখলে নিতে এবং ভাড়া তাকে দিতে ভাড়াটিয়াদের কে হুমকি দিয়ে আসছেন।
এদিকে এলাকায় লোকেমূখে প্রচারিত হচ্ছে মাহামুদুল করিম প্রতিদিন মধু খেতেন। কোন একসময় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে মধুর সাথে বিষ মিশ্র করে দিয়ে খাবায়। ফলে মাহামুদুল করিমের মৃত্যু হয়েছে। এবিষয়টি নিয়ে এলাকায় ঘুরপাক খাচ্ছে লোকেমুখে। তার মৃত্যুর পর মাহামুদুল করিমের মায়ের অংশ বাদ না দিয়ে মাহামুদুল করিমের বাবা থেকে প্রাপ্ত পুরো অংশ তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার ও ছেলে মেয়েদের নামে নামজারি খতিয়ান সৃজিত করে৷
মামলার বাদী আজম উদ্দিন জানান আমার জায়গায় জোরপূর্বক স্থাপনা নিমার্ণ কাজ করছে তা বন্ধ করতে আদালতে গিয়েছি।
এদিকে রোজিনা আক্তার বলেন, আমি কারো জায়গাজমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ঘর করতেছিনা। আমার স্বামীর কিনা ও তার বাবা থেকে প্রাপ্ত জায়গায় ঘর করছি। মাহামুদুল করিম বিষ খেয়ে মারা গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন অনেক দিন সম্পর্ক করে বিয়ে করেছি তাকে কেন বিষ খাবাবো। এসব কিছু হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার স্বামীর প্রাপ্ত জায়গা জমি থেকে আমাদের কে বঞ্চিত করতে অপচেষ্টা করছে তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ২ মোহাম্মদ সাজ্জাদ বলেন জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ হলে আমি সহ গ্রাম পুলিশ গিয়ে কাজ না করতে বলছি মালিকপক্ষ কে।
দিকে তারপরও আদেশ অমান্য করে কাজ করলে প্যানেল চেয়ারম্যান ১ শাহ নেওয়াজ আজাদ বাদীপক্ষকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
Posted ৪:৩৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin