শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার রেললাইনসহ ১৭ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

কক্সবাজার রেললাইনসহ ১৭ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

চারদিকে সাজসাজ রব। নিরাপত্তার চাদরে যেমন ঢাকা হয়েছে, তেমনি মানুষের মধ্যে রয়েছে উচ্ছ্বাস। রাজনৈতিক অঙ্গন খুবই সরগরম। এতো আয়োজন প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে। উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে জেলাজুড়ে। এছাড়া ব্যানার, ফেস্টুন, মতবিনিময় সভা, প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক উন্নয়ন, সাহসিকতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সফলতা নিয়ে কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায় জারি-সারি ও ভাটিয়ালি গানের আসর চলছে গ্রাম থেকে শহরে।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মাতারবাড়ী জনসভা ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক কথায় জনসমুদ্রে পরিণত হবে এ জনসভা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলাজুড়ে নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে।

এর আগে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর ২৯ প্রকল্পের উদ্বোধনের এগারো মাসের মাথায় আগামী ১১ নভেম্বর কক্সবাজার সফর আসছেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন সকালে রেল মন্ত্রণালয়ের অধিনে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা চান্দেরপাড়া এলাকায় নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশনের উদ্বোধন করবেন তিনি। পরে সুধিজনের সঙ্গে মতবিনিময়ে করে বিকেলে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এ সময় রেললাইন প্রকল্পসহ ১৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইকনিক রেললাইন স্টেশন ও রেললাইন ছাড়া ১৩টি প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য এবং তিনটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য ফলক স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর যোগ্য প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় হয়েছে ৫৩৪৬৭.৬২৬ কাটি টাকা।

যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে:

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৫৯.৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দরে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরা ঘাটে ৫৯৫ মিটার দীর্ঘ পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ৪.৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ঠান্ডা চৌকিদারপাড়া ৬০ মিটার আর সি সি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চকরিয়া পৌরসভা বাস টার্মিনাল সম্প্রসারণ প্রকল্প, ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ) ডিজাইন ও স্থাপনকরণ প্রকল্প।

৩.০৮০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় কক্সবাজার সদর উপজেলা জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, মহেশখালীতে ২.৩৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ইউনুসখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ২.৮৫০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়ায় রত্না পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যাললয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ২.৭৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ৫১,৮৫৪.৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালীতে মাতারবাড়ি ২৬০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৬৪৭.১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণ প্রকল্প, ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (১ম পর্যায়) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ডিপোজিট ওয়ার্ক হিসেব বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ২১২ একর ভূমি ভরাট , ৪.৭৭৪ কিমি স্লোপ প্রোটেকশন বাঁধ নির্মাণ, এপ্রোচ রোড়সহ দুটি ব্রিজ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এবং ২৫.৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে রামুতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।

যেসব প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন:

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে টেকনাফে মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার নির্মাণ। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭.০৯ কোটি টাকা। রামুর জোয়ারিনালা ইউপি-মোহসিনা বাজার ভায়া নন্দাখালী সড়কে ১৮৪ মিটার দীর্ঘ আর্চ ও আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প। এটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩.৪৯ কোটি টাকা। ১৭৭৭৭.১৬১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালী মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প এবং ১৬.৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সস্প্রসারণ (৪র্থ পর্যায়) প্রকল্পের ভিত্তি করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন। সেদিন ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেনার জেটি এবং ১৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রফটশ (জাহাজের নিচের অংশ) ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি বহুমূখী জেটি এবং একটি কন্টেনার ইয়ার্ডসহ বন্দরের অন্যান্য সুবিধার নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ফলে আট হাজার থেকে ১০ হাজার কন্টেইনার জাহাজ সরাসরি জেটিতে প্রবেশ করতে পারবে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে কোম্পানিটি এরমধ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলটি সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রস্থ ১০০ মিটার থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:১৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]