বৃহস্পতিবার ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মায়ের পিঠে চড়ে পরীক্ষা দিলো সুমাইয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট

মায়ের পিঠে চড়ে পরীক্ষা দিলো সুমাইয়া

যে কোনো প্রতিবন্ধকতা ইচ্ছে শক্তিকে কখনো দমাতে পারে না, তারই দৃষ্টান্ত সুমাইয়া। পায়ে হেঁটে চলতে না পারলেও প্রবল ইচ্ছে শক্তির কারণে মায়ের পিঠে চড়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে এই শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতে সমাজের জন্য কাজ করতে চায় সুরাইয়া।

জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের চান্দিনাপাড়া গোবীন্দপুর এলাকার আব্দুর রহিমের মেয়ে সুমাইয়া। দুই বছর বয়স থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়ার সময় তা প্রকপ আকার ধারণ করে। স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা করলেও ভেঙে যেতে শুরু করে পায়ের হাড়। এতে বন্ধ হয়ে যায় তার চলাফেরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যায় তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে এখন কিছুটা সুস্থ সুমাইয়া।

তবে, তার চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়েছে এই শিক্ষার্থী। এতো কিছুর পরেও তবুও দমে যায়নি সুমাইয়া। স্বাভাবিকভাবে চলতে না পারলেও ভবিষ্যতের আশায় মায়ের পিঠে করে এবারে কেন্দ্রে যায় সে। উপজেলার বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে যশাই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় ১০৮ নম্বর কক্ষে সদ্য শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষা দেয় সুরাইয়া। তার অদম্য এ ইচ্ছে শক্তিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেয়ার কথা জানিছেন স্থানীয়রা।

প্রতিবন্ধকতা জয়ী সুমাইয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই তার চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। তাই মায়ের পিঠে চড়ে ১২ বছর অতিক্রম করে এখন সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লেখাপড়া শেষে সরকারি চাকরির মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখতে চায় এই শিক্ষার্থী। সেইঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করবেন বলে জানায় সে। তবে, সময় মতো চিকিৎসা করাতে না পারলে তার এ স্বপ্ন পূরণ হবে না। তাই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সুমাইয়া।

সুমাইয়ার মা আরজিনা খাতুন জানান, মেয়ের ভবিষ্যৎ সুস্থ জীবনের কথা মাথায় রেখে ভারতের চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছেন পরিবারটি। এরই মধ্যে তার পেছনে দিনমজুর বাবার সব টাকা-পয়সা শেষ। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করলেও তার চিকিৎসা সেবা চালাচ্ছেন তারা। ভারতে চিকিৎসার পর কিছুটা আরোগ্য হলে ডাক্তার আবারো তাকে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। তবে অর্থ সংকটে আর যাওয়া হয়নি। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছে সুমাইয়ার পরিবার।

আরমান নামে এক অভিভাবক বলেন, অনেক শিক্ষার্থী নানা অজুহাতে লেখাপড়া করতে চায় না। সুমাইয়ার অদম্য ইচ্ছে শক্তিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগালে সফলতা আসবে বলে মনে করি।

এ বিষয়ে পার্বতীপুর সমাজসেবা কর্মকর্তা তাপস রায় বলেন, বিষয়টি জানার পর তাকে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]