সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র ২৩ নাবিক দেশে ফিরছেন যেকোনো সময়। মিলেছে দস্যুদের সঙ্গে জাহাজ কর্তৃপক্ষের মুক্তিপণ নিয়ে সমঝোতার ইঙ্গিত। তবে কবে নাগাদ দস্যুদের কবল থেকে নাবিকরা মুক্তি পাচ্ছেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি।
জাহাজটি কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। নাবিকদের মুক্তিপণ হিসেবে দস্যুদের অর্থ দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হননি মালিকপক্ষের কেউ।
তবে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জাহাজে জিম্মি নাবিকরা সুস্থ আছেন। দস্যুদের সঙ্গেও আমাদের আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। ঈদের আগেই যেন জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি- সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।
কবির গ্রুপের আরেক কর্মকর্তা জানান, দস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের মুক্ত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মুক্তির পর ২৩ নাবিককে আকাশপথে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। জাহাজটিতে নতুন করে ২৩ জনের একটি টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। কয়লাভর্তি জাহাজটিকে সোমালিয়া থেকে দুবাই নিয়ে যাবেন তারা। এরই মধ্যে সেই ২৩ নাবিকের নতুন টিম প্রস্তুত করেছেন মালিকপক্ষ।
এদিকে জাহাজে জিম্মি ওয়েলার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের স্বজনরা জানান, রোববার রাতে ফোন করেছেন শামসুদ্দিন। জিম্মি সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা রয়েছে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজে। গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লাগুলো নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এরই মধ্যে ১২ মার্চ দুপুরে ভারত ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি।
এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। জাহাজটির ২৫ বাংলাদেশি নাবিকসহ ১০০ জনকে জিন্মি করে রাখা হয়েছিল। জিন্মি হওয়াদের মধ্যে ছিলেন এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীও। পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এসআর শিপিংয়ের অধীনে মোট জাহাজের সংখ্যা ২৪টি। এরমধ্যে সর্বশেষ যুক্ত হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। ২০১৬ সালে তৈরি এ বাল্ক ক্যারিয়ারের দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। এটির পূর্বের নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। গত বছর এসআর শিপিং কিনে নেয়ার পর নাম রাখা হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’।
