বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে বছরে তামাকজনিত রোগে মৃত্যু ১ লাখ ৬১ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০১ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট

দেশে বছরে তামাকজনিত রোগে মৃত্যু ১ লাখ ৬১ হাজার

বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে প্রতিবছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। বছরে তামাকের পরোক্ষ ক্ষতির শিকার হয় ৬১ হাজার শিশু।

এতে কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন আরো ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।

রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে তামাকবিরোধী সামাজিক সংগঠন ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ যৌথভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ঐ সময় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন যুগোপযোগী করণের দাবি জানান আয়োজকরা।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজামুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক।

তিনি বলেন, তামাকজাত পণ্য থেকে সরকার ২২ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স পায়। কিন্তু ক্ষতি হয় বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। ধূমপান ভালো কোনো জিনিস না। তার পরও এটা ছাড়ছে না মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে এমন কোনো জায়গা যেন না থাকে- যেখানে শিক্ষার্থীরা ধূমপান করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা কর্নার যাতে শিক্ষকদের নজরে থাকে এমন ব্যবস্থা করা উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. নিজামুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক চাষ সরকারিভাবে নিরুৎসাহিত করে অন্য ফসল চাষে চাষিদের উৎসাহিত করতে হবে। ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান (স্মোকিং জোন) পরোক্ষভাবে প্রায় শতভাগ মানুষ ধূমপানের ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তামাকজাত পণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করার দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, তামাক মানবদেহের জন্য ভয়ংকর বিষ। বিশ্বে তামাকজনিত রোগে বছরে প্রায় ৮০ লাখের বেশি মৃত্যু হয়। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত। ৬১ হাজারেরও বেশি (১৫ বছরের নিচে) পরোক্ষ ধূমপানের কারণে সৃষ্ট রোগে ভুগছেন। বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে করার দাবি জানিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। সম্প্রতি প্রকাশিত স্বাস্থ্য সুরক্ষার ফাউন্ডেশনের গবেষণার তথ্যমতে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারিতে অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ী রোগীদের মৃত্যুর হার ৩ গুণ বেশি ছিল এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি রোগীর। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ব্যক্তির ক্ষেত্রেও কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৪০ শতাংশেরও বেশি ছিল। এর পাশাপাশি তামাকের কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতিও বিপুল।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ৬ দফা সুপারিশ করেছে। সুপারিশগুলো হলো- পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বন্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন ও খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা ও ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা। এ ছাড়া বিদ্যমান আইনকে সংশোধন করে যুগোপযোগী করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০১ এপ্রিল ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]