শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় পৌঁছেছে আট বাংলাদেশির মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ | প্রিন্ট

ঢাকায় পৌঁছেছে আট বাংলাদেশির মরদেহ

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া আট বাংলাদেশির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। মরদেহগুলো লিবিয়া থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে বিমানযোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে তিউনিসীয় উপকূলে গেলে মধ্য রাত সাড়ে চারটার দিকে নৌকাটি ডুবে যায়।

মরদেহ হস্তান্তরের সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।

নৌকাটিতে মোট ৫৩ জনের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের আটজন, সিরিয়ার পাঁচজন, মিসরের তিনজন ও নৌকাচালক রয়েছেন। ঐ ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি নাগরিক। নিহত অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।

নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। তারা সবাই মাদারীপুরের বাসিন্দা।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ঐ নৌকায় থাকা আরো ১১ বাংলাদেশিও দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্রাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরেছেন। তারা অভিযোগ করে বলেছেন, ঐ আটজন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় যেহেতু একটা মামলা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে আশা করছি‌।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেন নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী। মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সংঘবদ্ধভাবে খুন এবং মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে গত ১৯ এপ্রিল মামলা দায়ের করার দুইদিন পরই তাদের আটক করা হয়।

মামলার এজাহারে সুনীল বৈরাগী অভিযোগ করেন, তার ছেলে সজল বৈরাগী উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যেতে ইচ্ছুক ছিলেন। সজলের পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী (২৪) এবং লিবিয়ায় অবস্থানরত মোশারফ কাজী ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে বৈধ পথে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। সজল বৈরাগী ও তার পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি হয়।

দুই পক্ষের সম্মতিতে গত বছর ১৭ নভেম্বর যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের বাসায় আড়াই লাখ টাকা এবং পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেয়া হয়।

বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে গাড়ি থেকে নামার আগেই সজলের কাছ থেকে আরো নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ছয়টায় দুবাই রওনা হন তিনি। ৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের বাসায় গিয়ে যুবরাজ কাজীর হাতে আরো সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আসেন পিতা সুনীল বৈরাগী। কিন্তু এরপর থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি সুনীল।

এরপর গণমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর চারটার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে সজল রয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ২০ জনের একটা চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে নিহতদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেন। তারা নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে ছোট নৌকায় তুলে দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে তাদের মৃত্যু ঘটান।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]