মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আজ

বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিসর, তুরস্ক, পর্তুগাল, ভেনেজুয়েলাসহ ১১৪ দেশের ৪৯৩ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ-২০২২’। চার দশক ধরে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। দুই বছর পরপর অনুষ্ঠেয় এই আয়োজন করোনার কারণে ২০১৮ সালের পর কয়েক দফা পিছিয়ে এ বছর আবার শুরু হচ্ছে। শিল্পের এই মহাযজ্ঞ ইতোমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে এশিয়ার বৃহৎ চারুকলা প্রদর্শনী হিসেবে। প্রদর্শনী চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তিনি বলেন, তিনি মনে করেন সংঘাতের বিপরীতে শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্পণ্ডসংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই। শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি একমাসব্যাপী ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০২২’ আয়োজন করছে জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। বিশ্বের দীর্ঘকালব্যাপী চলমান প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে অন্যতম এই আয়োজনে ১১৩টি দেশের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি সকল শিল্পী, লেখক, কিউরেটর এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পেশাদার কর্মীদের আন্তরিক অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানান। এ বছর প্রদর্শনীতে দেখা যাবে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম। চিত্রকলা, ভাস্কর্য, আলোকচিত্র, স্থাপনাশিল্পসহ নানা মাধ্যমে নির্মিত শিল্পকর্ম নিয়ে যোগ দিচ্ছেন দেশের ১৪৯ এবং বিদেশের ৩৪৪ জন শিল্পী। বাংলাদেশের ৪৫ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে ৩১টি পারফরম্যান্স আর্ট এবং বিদেশি সাত শিল্পীর সাতটি পারফরম্যান্স আর্ট উপস্থাপন করা হবে প্রদর্শনীতে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন ৬৮টি দেশের শিল্পীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচার জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ভার্চ্যুয়ালি প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী বলেন, শিল্পের নানা মাধ্যমের প্রদর্শনীর সঙ্গে এই বিয়েনালটি হতে যাচ্ছে ১১৪টি দেশের শিল্পীদের অভূতপূর্ব এক মিলনমেলা। আমরা এই বিয়েনালের কোনো থিম নির্ধারণ করি না। কারণ আমরা জানি, প্রত্যেক শিল্পী তাঁর ভেতরে এক শৈল্পিক দর্শন ধারণ করেন, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে শৈল্পিক বুদ্ধিজীবীতে পরিণত করে। আমরা জানতে চাই চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শিল্পী বর্তমান সময়কে কীভাবে চিত্রিত করেছেন; তাঁর মানসপটে শিল্পের কোন মাধ্যমে তিনি তাঁর ভাবনার কথা তুলে আনতে চান। এ বছরও প্রদর্শনীর শিল্পকর্মের ওপর থাকছে পুরস্কার। নয়টি শাখায় পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যমানের তিনটি গ্র্যান্ড এবং তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ছয়টি সম্মানসূচক পুরস্কার। পুরস্কারের বিচারক ছিলেন বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী, শ্রীলঙ্কার জগৎ ভিরাসিংহে, তুরস্কের নারসেরিন টর, যুক্তরাজ্যের ইয়োনা ব্লাজউইক ও পোল্যান্ডের শিল্পী জ্যারোস্ল সুহান। সংবাদ সম্মেলনে ইয়োনা ব্লাজউইক বলেন, এ আসরের কাজ বাছাইয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি সাম্প্রতিক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট। বর্তমান সমাজের চালচিত্র বা প্রতিদিনের ঘটনাগুলো কীভাবে শিল্পীর মনে রেখাপাত করছে, শিল্পকর্মে তা কতটা উঠে এসেছে, তা জানতে মুখিয়ে ছিলাম আমরা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক কীভাবে শিল্পীরা তাঁদের শিল্পকর্মে তুলে আনছেন, সেগুলোয় নজর রেখেছি আমরা। জগৎ ভিরাসিংহে বলেন, এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল চারুশিল্পের দুই প্রজন্মের মিলনমেলা। ১৯৪৭ সালে যে শিল্পীর জন্ম, তিনি যেভাবে বিশ্বকে দেখেছেন, চিত্রিত করছেন তার সঙ্গে বিস্তর তফাত হবে নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া শিল্পীদের। দুই ধারার শিল্পীদের শিল্পকর্ম দেখার অভূতপূর্ব সুযোগ এসেছে এবার। এবারও প্রদর্শনী উপলক্ষে থাকবে দেশ-বিদেশের শিল্পী, সমালোচক, বিচারক ও পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণে সেমিনার। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে রয়েছে সেমিনার ‘হোম অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট’। শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শিল্পী ও সমালোচক মোস্তাফা জামান। আলোচনায় অংশ নেবেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। একই দিনে একই বিষয়ে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনারকক্ষে বেলা দুইটায় আলোচনা করবেন শিল্পণ্ডসমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ। পরদিন শুক্রবার নাজমা খান মজলিসের সভাপতিত্বে সেমিনারকক্ষে আলোচনা করবেন স্থপতি সাইফ উল হক। দ্বিতীয় পর্বে জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আহরার আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শামসাদ মর্তুজা। প্রদর্শনী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের নিয়ে নৌভ্রমণ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, আর্টক্যাম্প, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]