গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভা কক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলের আসন প্রতি বার্ষিক নবায়ন ফি কমানোর দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেড় ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকেন। এ ঘটনায় স্থবির হয়ে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।
ঘটনা-১: গত ১৫ মার্চ ২০২৩ এ বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল (৬৪-তম এর) সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ২৯ মার্চ ২০২৩ এ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ০২ এপ্রিল ২০২৩ এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি গঠনসহ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাননীয় উপাচার্যকে ২৯ মার্চ ২০২৩ এ লিখিতভাবে দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। দাবির প্রেক্ষিতে ০২ এপ্রিল ২০২৩ এর মধ্যে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দাবী আদায়ে পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার (০৩এপ্রিল) সকাল ১১:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে কালোব্যাচ ধারণ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মানবন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ,কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এরপর তারা দাবি আদায়ের লক্ষে উপাচার্যের সভা কক্ষে অবস্থান নেয়। উল্লেখ্য, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় সম্পন্নে দীর্ঘ সূত্রিতা, স্বকীয়া হারানো ও আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগে ৬৪-তম একাডেমিক সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঘটনা-২: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপাচার্য কক্ষে অবস্থান করায় দাবি আদায়ে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বলেন, হলের সিট পুনরায় নবায়নের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে যে টাকা (৫২৬৫৳) বরাদ্দ করা হয়েছে তা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের চেয়ে ৪/৫ গুণ। আমদের হলে একজনের সিটে দুজনকে উঠানো হয়েছে। আমরা সকল সুবিধা একজনের জায়গায় দুজন ভাগ করে ব্যবহার করছি। তাই সিট ফি ভাগ করে দিতে হবে। গতবছর হলে উঠার সময়ে ফি প্রদানকালে ৫০০ টাকা জামানত ফিসহ ৫২৬৫টাকা দিতে হয়েছিল, চলতি বছরেও পুনরা জামানত সহ হলের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।তাহলে কি আমরা জমা দিবা? পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ফি এর তালিকাসহ লিখিত আবেদন দিয়ে আসন প্রতি হল ফি কমানোর দাবি জানান।
শিক্ষকদের দাবির মুখে প্রায় দেড় ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি আগামী ৫/৬ তারিখ বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও ইউনিট ভিত্তিক ভর্তি কমিটি গঠন, ৮ তারিখ সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে তা পাশ করে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দিতে শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য জানান, আবাসিক হলের বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ দেখবে। এ বিষয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, হলের সম্পূর্ণ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়। শিক্ষার্থীদের আসন বাবদ ফি কমানোর জন্য আমরা ট্রেজারার এবং উপাচার্যের সাথে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব।