নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
খরা ও তাপপ্রবাহে পুড়ছে সিংড়া। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। অনেক এলাকায় ৮ থেকে ১০ ফুট গর্ত খুঁড়ে মেশিন বসিয়েও বোরোর জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য পানি মিলছে না। বেশ কিছু এলাকায় ধান পুড়ে সাদা হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষক।
বুধবার সিংড়ার চলনবিলের আরকান্দি, নলবাতা, ছোট বেলঘরিয়া, মটগ্রাম, হাতিয়ান্দহ, চৌগ্রাম বড়িয়াসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এক মাস ধরে বেশিরভাগ বাড়ির টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে রান্না, গোসল ও খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গৃহিণীরা দূর-দূরান্তের গভীর নলকূল ও সাবমার্সিবল পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। বোরোর জমিতেও সেচ দেওয়ার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। চাষিরা মাটি খুঁড়ে মেশিন ৮ থেকে ১০ ফুট গভীরে নামিয়েও পানি পাচ্ছেন না। নিরুপায় হয়ে তাঁরা ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের নদনদীতে পাইপ বসিয়ে পানি সেচ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এর পরেও ধানের জমি ফেটে চৌচির। অনেক জমির ধান পুড়ে ব্লাস্ট রোগে সাদা হয়ে গেছে।আরকান্দি গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে সেচ দিতে পারছি না। তাপদাহে সেই ধানে পুড়ে খাক। শীষে ধান নেই বললেই চলে। এখন দেড় কিলোমিটার দূরে গদাই নদীতে পাইপ বসিয়ে সেচ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
একই গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেছেন। তেল-সার সবকিছুর মূল্য বেড়েছে। এখন শুরু হয়েছ সেচ সংকট। ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঋণের টাকা শোধ নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন তিনি।
নলবাতা গ্রামের কৃষক আলম বলেন, গ্রামে ২ শতাধিক বসতি। এক মাস ধরে বেশিরভাগ বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। খাওয়া ও রান্নাবান্নার পানির জন্য নলবাতা সরদার পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নলকূপটিই ভরসা।
একই গ্রামের ছালমা বেগম বলেন, পানির জন্য এত কষ্ট সহ্য হচ্ছে না। গ্রামের মসজিদের হাইসো প্রকল্পের একটি নলকূপ থেকে সবাই পানি নিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। সিংড়ার চলনবিলের বেশিরভাগ এলাকায় একই অবস্থা। পানির সংকট নিরসনে কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, উপজেলায় ৩৬ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেড়শ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আর পাকা রয়েছে ১ হাজার ২০০ হেক্টর। তবে সেচ সংকট বেড়েছে। এ অবস্থায় করণীয় বিষয়ে মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে প্রচার ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
Posted ৪:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin