শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৮ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী আজ

এক উজ্জ্বল সূর্যের ব্যতিক্রমী কিরণে বিশেষভাবে মহিমান্বিত ২৫ শে বৈশাখের আজকের এই দিনটি। কেননা এদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন।

১৮৬১ সালের এদিন কলকাতার জোড়াসাঁকোয় সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে জন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। আজ তাঁর ১৬২তম জন্মবার্ষিকী।

কালজয়ী এ কবি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্ম নেন। সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় শৈশব থেকেই নানা গুণ প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ ঘটে তার জীবনে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোট গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। সংস্কৃতি জগতে অসামান্য কীর্তির জন্য তাকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা, বাণী বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যুগিয়েছে। এ কারণে তার রচিত “জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে” ও “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গান দুটি যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত।

বাংলা সাহিত্য ও উপন্যাসে এক ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। লেখার মাধ্যমে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের অবিচার, অসংগতি, ভালোবাসা, অনুভূতির গভীর প্রকাশ। প্রেম ভালোবাসার সঙ্গে আধ্যাত্মিক ভালোবাসাকেও একই সুতায় গেঁথে মালা তৈরি করার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিলেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, তরুণরাই একটি জাতির ভবিষ্যৎ। মনের অভিব্যক্তি আর নানা ভাবনা বিস্তৃত করে তাই কবি নতুনদের আহ্বান জানিয়েছেন তার লেখায় শতবার। লিখেছেন, ‘হে নূতন/ দেখা দিক আর বার/ জন্মের প্রথম শুভক্ষণ/ তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন/ সূর্যের মতন’।

কবির লেখা জঙ্গিবাদ, উগ্রতা, জাতীয়তাবোধ, শ্রেণিবৈষম্য, জাতিতে জাতিতে ও ধর্মে ধর্মে হানাহানির সংকীর্ণতাকে এক পাশে রেখে মানবজাতিকে আলোর পথ দেখায়। একই সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক বিভিন্ন বিষয়গুলোকে ভাবিয়ে তুলতে বাধ্য করে নতুন করে।

কবির কিছুর বৈচিত্র্যময় উল্লেখযোগ্য লেখা হলো শেষের কবিতা, নৌকা ডুবি, ঘরে বাইরে, নষ্ট নীড়, স্ত্রীর পত্র, সুভা, গীতাঞ্জলী, ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী, রক্তকরবী, চিরকুমার সভা, বিসর্জন, চিত্রাঙ্গদা, গীতবিতান ইত্যাদি।

তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় কিছু গান হলো আমারও পরাণও যাহা চায়, আমি চিনিগো চিনিগো তোমারে ওগো বিদেশিনি, চাঁদের হাসি বাধ ভেঙেছে, ভালোবাসি ভালোবাসি, তুমি রবে নীরবে, তোমার খোলা হাওয়া, আকাশ ভরা সূর্য তারা, আমার সকল দুঃখের প্রদ্বীপ, আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে, মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাই না, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন ইত্যাদি।

কবিকে তাঁর লেখায় প্রায়ই আত্মসমালোচনা করতে দেখা গেছে। ব্যক্তিজীবনে নিজেকে ফাঁকি দিলেও নিজের লেখায় কখনও ফাঁকি দেননি রবীন্দ্রনাথ। তাই সমাজের বেঁড়াজালে যা করে উঠতে পারেননি তারই শক্ত জবাব হিসেবে হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলমের ক্ষুরধার লেখা।

২৫ শে বৈশাখের এই দিনে তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আবারও নতুন করে প্রতিটি পাঠকের হৃদয়ে, চিন্তার জগতে আধুনিকতার উন্মেষ ঘটাক। সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণের পথে অভিসারী হয়ে ওঠার প্রেরণা যুগিয়ে বিশ্বকবি চির জাগ্রত থাকুক প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৮ মে ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

দেহাতি চিকেন
(211 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]