নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
সবকিছু ঠিক থাকলে মাত্র কয়েক মাস পরেই দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গণসংযোগও চালাচ্ছেন তারা। আওয়ামী লীগের এ চিত্র এখন দেশজুড়ে। এ অবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৯৭ জন প্রার্থী চূড়ান্তের খবর। এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রাজনীতির অন্দরমহলে শুরু হয়েছে চুপিসারে কানে কানে কথা।
এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পর্যায়ের নেতারা বলছেন, কারো মনোনয়নই চূড়ান্ত হয়নি। যাদের নাম চূড়ান্ত বলে প্রকাশ করা হচ্ছে তারা সবাই যার যার এলাকায় জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তা অনুযায়ী অনুমাননির্ভর সংবাদ কেউ প্রকাশ করলে তা ধ্রুব সত্য বলে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও খবরটি গুজব ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও রাজনীতিতে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যেই নানা আলোচনা চলছে। আবার নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় টিকিট কে পাচ্ছেন, কারা পাচ্ছেন, আসলে কী হচ্ছে? এসব নানা বিষয় জানতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ভিড় করছেন, আবার কখনও সরাসরি চলে যাচ্ছেন নেতাদের বাসায়। সব মিলিয়ে দেশে নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ৯৭ জন প্রার্থী চূড়ান্ত- এমন খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, এ ধরনের খবর কোথায় ছড়িয়েছে, কীভাবে ছড়িয়েছে তা আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিষয়টি গুজব কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যে বিষয়ে জানি না তা নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাদের নাম দেখেছি, তারা প্রত্যেকেই যার যার এলাকায় জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা। তবে এটা বলা যাবে না যে তারা চূড়ান্ত প্রার্থী। আবার এও বলা যাবে না যে তারা কেউই মনোনয়ন পাবেন না। তারা পেতেও পারেন; না ও পেতে পারেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের কর্মী নাসির বলেন, আমি প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে ৯৭ জন প্রার্থীর নাম জানতে পেরেছি। এ সংবাদের সত্যটা কতটুকু জানি না। তবে তালিকায় আওয়ামী লীগের কিছু কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের নাম রয়েছে, যারা বিশেষ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া আরও এমন নাম রয়েছে, যারা বর্তমানে দলের সাংগঠনিক পর্যায়ের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছেন।
আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ ধরনের কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি। এখন তালিকা প্রকাশ করার সময়ও হয়নি। যারা বারবার এ ধরনের তালিকা বা মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। এ ধরনের অপপ্রচার তৃণমূল আওয়ামী লীগে অস্থিরতা তৈরির একটি অপচেষ্টা মাত্র। গুজবকে না বলুন। এসব গুজব দেখলেই পেজে ইনবক্স করুন অথবা [email protected] এ ইমেইল করুন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। কারণ, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সে হিসাবে ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে ভোট হতে হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলীয় হাইকমান্ড এরই মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। যদিও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
Posted ১:৫৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin