নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল বস্তুগুলো যদি সরিয়ে নেয়া হয় তাহলে বর্তমানের জীবনযাপন ব্যবস্থাকে আর চেনা যাবে না। গাড়ি, কারখানা, স্মার্টফোন, জুতা, চুলের জেল হতে শুরু করে কৃষিকাজ ও আধুনিক জীবন যাত্রার প্রায় অধিকাংশ কিছুই জীবাশ্ম জ্বালানির উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।
মার্ক স্টোলের ‘প্রফিট’ বইয়ে উঠে এসেছে পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিভিন্ন দিক ও এর সঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানির ধ্বংসাত্মক রূপ। আদিকালে মানুষ কীভাবে এই পৃথিবীর উপর কর্তৃত্বশালী হয়ে উঠে সেই থেকে তুলে আনা হয় তার বইতে। যেখানে মরক্কোর কয়লার খনির প্রসঙ্গও উঠে আসে। কীভাবে মানুষ অন্যান্য প্রাণীকে ধ্বংস করা শুরু করে। এই পুঁজিবাদ পৃথিবীকে মানুষসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী বসবাসের অনুপযোগী করার পেছনে কীভাবে সরাসরি জড়িত তাও তুলে আনা হয়েছে তার এই বইতে।
শিল্প বিপ্লবের আগে জ্বালানির প্রয়োজন ঘরের কাজেই সীমিত ছিল। জ্বালানির চাহিদা ক্রমশ বাড়তে থাকায় ১৬ শতকে গাছ কাটার পরিমাণ বাড়তে থাকে। উজাড় হতে থাকে বনাঞ্চল। এসময় আবিষ্কৃত হয় খনিজ কয়লা। এর পরেই শিল্প বিপ্লবের নতুন যুগের সূচনা ঘটে। পৃথিবীতে জ্বালানি চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। শিল্প বিপ্লবের মূল চালিকা শক্তিই ছিল কয়লা। পরে ধীরে ধীরে আবিষ্কার হয় তেল বা গ্যাসের মতো নবায়ন অযোগ্য জ্বালানি যা জীবাশ্ম জ্বালানি নামেই পরিচিত।
বর্তমানের পৃথিবী বিদ্যুতশক্তি ছাড়া কল্পনা করা কঠিন। বিদ্যুতের বড় অংশ তৈরি হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে। পৃথিবীজুড়ে মানুষ প্রতিনিয়ত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার ছুটে চলছে স্থল-জল ও আকাশপথে। এই ছোটাছুটির জন্য যেসব যান ব্যবহৃত হচ্ছে তার শক্তিও আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। সভ্যতার এই স্থরে জীবাশ্ম জ্বালানি জড়িয়ে আসে প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। এমন অবস্থায় জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়া পৃথিবীটা কেমন হতো তা জেগে উঠেছে অনেকের মনে।
কয়লা এবং পেট্রোলিয়াম জাতীয় তেল অতি ব্যবহৃত প্লাস্টিক, সিন্থেটিক রবারের মতো উপাদান তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ জ্বালানি না থাকলে হাইড্রোকার্বনের দীর্ঘ চেইন অণুগুলো সংশ্লেষণ করতে হতো ইথানল বা ভোজ্য তেল থেকে। ইথানল ও ভোজ্য তেল থেকে এসব উপাদান সংশ্লেষণ করার পদ্ধতিটি বেশ জটিল। ফলে প্লাস্টিক এবং সিন্থেটিক রবারের মতো উপাদান আবিষ্কৃত হতো অনেক দেরীতে। এসব পণ্যের দামও থাকতো সাধারণের হাতের নাগালের বাইরে।
জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে তৈরি সার কৃষি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন জ্বালানি না থাকলে সারের উৎপাদন তীব্রভাবে ব্যহত হতো যা ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দিতো। এতে খাদ্য ঘাটতি ছড়িয়ে পড়তো।
Posted ১:৫১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin