নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। সেই সঙ্গে আইপিএলের সুবাদে ভারতের কন্ডিশন বেশ ভালোই জানাশোনা আছে ইংলিশদের। বাড়তি পাওনা ছিল অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা। সবকিছু মিলিয়ে ‘ফেবারিট’ তকমা নিয়ে এবারের বিশ্বমঞ্চে হাজির হয়েছিলেন জস বাটলার-বেন স্টোকসরা।
সাম্প্রতিক ফর্ম ও শক্তিমত্তার বিবেচনায় ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালের চেয়ারেও দেখেছিলেন অনেকে। আর তেমনটা না ভেবে উপায় কি? ভারতের কন্ডিশনে বেশ পরীক্ষিত ইংলিশ ক্রিকেটারা। অবশ্য সেটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সুবাদেই হয়েছিল। কিন্তু ভারতে তো চলছে ৫০ ওভারের বিশ্বযজ্ঞ। যেখানে খেই হারিয়ে বিপদগ্রস্ত বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
চলমান বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে বাংলাদেশ ম্যাচের প্রসঙ্গ বাদ গেলে বাকি চারটিতে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছে ইংলিশ সিংহরা। যেখানে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা বোধহয় আফগানরাই দিয়েছে।
দিল্লির অরুণ স্টেডিয়ামে আফগানদের দেওয়া চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুজিব-রশিদদের ঘূর্ণিতে হোঁচট খায় ইংল্যান্ড। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রতিরোধই গড়তে পারেননি জস বাটলাররা। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্গালুরুতে তো শ্রীলংকার কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে ক্রিকেটের পরাশক্তি দলটি।
বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে লংকানদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল ইংলিশ বাহিনী। কিন্তু জিততে তো পারেই নি, উল্টো লংকানদের বোলিং তোপে অল্পতেই গুটিয়ে যায় তারা। পরে লক্ষ্য তারা করতে নেমে ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় এশিয়ার সিংহরা।
এমন পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিলেও স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছে না জস বাটলারের দল। চলমান বিশ্বকাপে ১০ দলের মধ্যে ৯ নম্বরে অবস্থান করছে দলটি। এই অবস্থায় আসরের সেমিফাইনাল থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে তারা। অবশ্য ‘যদি, কিন্তু’র সমীকরণে এখনো শেষ আশাটুকু টিকে আছে। তবে এর জন্যও তাকিয়ে থাকবে হবে অন্য দলের হারের দিকে।
শ্রীলংকার কাছে হেরে শুধু পয়েন্ট টেবিলেই নয়, আসরে টিকে থাকাও বড় শঙ্কা তৈরী হয়েছে ইংলিশদের। এমন পরিস্থিতিতে কোনো উত্তর জানা নেই ইংলিশ দলপতি জস বাটলারেরও। ম্যাচ শেষে বাটলারের সহজ স্বীকারোক্তি, ‘এর (কেন হচ্ছে না) কোনো সোজাসাপটা উত্তর এই মুহূর্তে নেই। আমাদের জন্য অনেক কঠিন আর হতাশার একটি টুর্নামেন যাচ্ছে। নিজের ওপর, সবার ওপর হতাশ। কেউই নিজেদের সেরাটা দিতে পারছি না।’
খেই হারানোর জন্য কি ইংল্যান্ডের অতি আত্মবিশ্বাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে? হয়তো সেটি হতেও পারে। কেননা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও আলোচনা হচ্ছিল, এবারের স্কোয়াড গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের চেয়েও ভালো। অথচ বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত উত্তাপ ছড়ানো পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারেনি ইংলিশরা।
ইংল্যান্ডকে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন দিশা দেখানে অধিনায়ক ইয়ন মর্গান তো বলেছিলেন, এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দুটি দল খেলাতে পারে। তাতেও দেখা যাবে, এর মধ্যে একটি দল ফাইনাল খেলবে।
শুধুই কি মর্গান, দলের বিপর্যয়েও অতি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ইংলিশ দলপতি জস বাটলার। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর এক সাংবাদিক বাটলারের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন- প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু করে বিশ্বকাপের মূল আসরে এই যে ভ্রমণের ধকল, এটাই কি ইংল্যান্ডের এমন পারফরম্যান্সের কারণ?
প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই বাটলার জবাব দেন, ‘আমাদের এই দলের এতজন আইপিএলে খেলি, এমন ভ্রমণসূচি আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়।’ স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন উঠছে, খেই হারিয়ে হারের হ্যাটট্রিক পূরণের পেছনে অতি আত্মবিশ্বাসেই কি বিপদগ্রস্ত গত আসরের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা?
ইংল্যান্ডের বাকি ম্যাচের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তান। খেই হারানো বিপদগ্রস্ত ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ যাত্রা কোন বিন্দুতে শেষ হয় সেটি না হয় সময়ই বলে দেবে।
Posted ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin